পাকিস্তানে নিষিদ্ধঘোষিত উগ্র ডানপন্থি দল তেহরিক-ই-লাব্বাইকের (টিএলপি) বিক্ষোভ দমনে মাঠে নামানো হচ্ছে সুপ্রশিক্ষিত রেঞ্জার্স সদস্যদের। বুধবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ ঘোষণা দিয়েছেন, পরবর্তী ৬০ দিন পাঞ্জাবে বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার্স মোতায়েন থাকবে। তার এই ঘোষণায় স্পষ্ট যে, উদ্ভূত পরিস্থিতি পুলিশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা পাকিস্তানে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
Advertisement
গত শুক্রবার (২২ অক্টোবর) টিএলপির কয়েক হাজার কর্মী ইসলামাবাদের দিকে লং মার্চ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সেদিন দুই পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান। বুধবারও পুলিশ-টিএলপির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন পুলিশ সদস্য নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।
পাঞ্জাব পুলিশের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, টিএলপি কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে এসএমজি, একে৪৭ ও পিস্তলের মতো অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
টিএলপি’র লং মার্চ ঠেকাতে প্রস্তুত পাকিস্তানের দাঙ্গা পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
Advertisement
এর পরপরই মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শোনা যায় সেখানে তিনি বলেছেন, টিএলপি’কে কোনোভাবেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে দেওয়া হবে না। বৈঠক শেষে পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাঞ্জাবে রেঞ্জার্স নামানোর ঘোষণা দেন।
ডনের খবর অনুসারে, রেঞ্জার্স সদস্যদের মাঠে নামানোর এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই মন্ত্রিসভায় গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে থাকা অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা নিশ্চয় জানেন, হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনে লড়াইয়ের জন্য রেঞ্জার্স নামানো উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আগুনে ঘি ঢালার সমতুল্য হতে পারে।
পাকিস্তানের রাস্তায় রেঞ্জার্স সদস্যরা। ফাইল ছবি
গত কয়েকদিনে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলেও এতে টিএলপির কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করা হয়নি। নিষিদ্ধঘোষিত দলটির সমর্থকেরা পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা জেলায় ঘাঁটি গেড়েছে এবং তাদের নেতারা বারবার বলছেন, যত বাধাই আসুক, তারা ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চ চালিয়ে যাবেন।
Advertisement
এ অবস্থায় বিক্ষোভকারীদের সামনে সশস্ত্র রেঞ্জার্স সদস্যদের দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে পাকিস্তানজুড়ে। যেকোনো সময় পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেএএ/এএসএম