নিষেধাজ্ঞা শেষে বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। মাছের শতাধিক ছোট-বড় আড়তে লেগেছে ইলিশ বেচাকেনার ধুম। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। তবে বেশিরভাগই ছোট ও মাঝারি আকারের। তাই দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বেড়েছে ক্রেতা।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কীর্তনখোলা নদী থেকে খাল হয়ে একের পর এক ইলিশ বোঝাই নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট ভিড়ছে ঘাটে। এরপরই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন আড়তদাররা। ট্রলার থেকে ঝুড়িতে শ্রমিকরা ইলিশ এনে ফেলছেন আড়তে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম মোকাম। সাধারণ ক্রেতার পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতার সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মোকামের মেসার্স আব্দুল্লাহ মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী ও জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জহির সিকদার জানান, ঘাটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শতাধিক নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট এসেছে। স্থানীয় নদ-নদীতে ধরা পড়া ইলিশের পাশাপাশি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ইলিশও বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। বেশিরভাগ ইলিশই মাঝারি ও ছোট। এর মধ্যে ৯০ ভাগ ইলিশের পেটেই ডিম রয়েছে।
আড়তদার জহির সিকদার বলেন, সকাল থেকে দুই হাজার মণের বেশি ইলিশ আমদানি হয়েছে। ক্রেতার বেশ ভিড় ছিল। তবে আমদানি বেশি হওয়ায় দামও তুলনামূলক কম।
Advertisement
তিনি বলেন, এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩৪ হাজার টাকায়। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ৮৫০ টাকা। রপ্তানিযোগ্য এলসি আকারের (৭০০-৯০০ গ্রাম) প্রতি মণ ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৭৫০ টাকা। হাফ কেজি বা ভেলকা আকারের (৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম) ইলিশের দাম মণপ্রতি ২৪ হাজার এবং কেজিপ্রতি দাম পড়ে ৬০০ টাকা।
ইলিশ কিনতে আসা মো. শিপলু জানান, অনেক ইলিশ উঠেছে। দামও কিছুটা কম। তাই চার কেজি ইলিশ কিনেছি।
ইলিশের পেটে ডিম থাকার বিষয়ে মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস জানান, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে বেশিরভাগ ইলিশই ডিম ছেড়ে সাগরে ফিরে গেছে। কিছু ডিমওয়ালা মাছ ধরা পড়ছে। অবশ্য ডিম ছাড়া মাছ পানির অনেক গভীরে বিচরণ করে। তাই ডিম ছাড়া মাছের চেয়ে ডিমওয়ালা কিছু মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। তবে এতে ইলিশের বেড়ে ওঠা ও বংশ বিস্তারে প্রভাব ফেলবে না।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবারের অভিযানে অনেক কড়াকড়ি ছিল। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সার্বক্ষণিক নদ-নদীতে টহলের ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় আলাদা টিম কাজ করেছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকারের দায়ে বরিশালে ৫০৭ জনের কারাদণ্ড হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩০০ টাকা।
Advertisement
সাইফ আমীন/এএইচ/এমএস