পুলিশে চাকরি দেওয়ার সুপারিশ ও টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
Advertisement
গ্রেফতাররা হলেন- জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার ছাবিল্লাহপুর গ্রামের ছামিউল আলম (৬৬), জেলার ফুলপুর উপজেলার কুড়িপাড়া গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে জালাল উদ্দিন (৭৫) এবং মুক্তাগাছা উপজেলার রহিমবাড়ি গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে মারুফ মিয়া (১৯)।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা শাখার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে সোমবার (২৫ অক্টোবর) মুক্তাগাছা, ফুলপুর ও জামালপুর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Advertisement
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা-২০২১ উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলায় একাধিক প্রতারকচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রেফতার ছামিউল আলম নিজেকে একটি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামানের সরকারের নম্বরে ফোন করে তার তিনজন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামানের সন্দেহ হলে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জামালপুর মো. ছামিউল আলমকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশ সুপারকে কল দেওয়া মোবাইলটি ও সিম জব্দ করা হয়।
ওসি সফিকুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ছামিউল আলম একসময় পুলিশ বিভাগের অনিয়মিত খুচরা মোটরপার্টস সরবরাহকারী ঠিাকাদার হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান। বর্তমানে তার পেশাগত কোনো পরিচয় নেই। তিনি বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ফোনে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিলেন।
ওসি বলেন, গ্রেফতার জালাল উদ্দিন পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে পাঁচজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেন। সেই পাঁচজনকে ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতেন এবং তাদের টিম লিডার কামরুল মিয়া নামে এক প্রতারক মোবাইল ফোনে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে ডিআইজি পরিচয়ে কথা বলে বিশ্বাস স্থাপন করাতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার জালাল উদ্দিন দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছেন বলে স্বীকার করেন। তার সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় আছে বলে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।
ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, মো. মারুফ মিয়া কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর অনলাইনে আবেদন করেন। প্রাথমিক আবেদনেই তিনি বাতিল হয়ে যান। পরে মারুফ মিয়া চাকরি প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য কম্পিউটারে সাহায্যে ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করেন। সেই ভুয়া প্রবেশপত্র নিয়ে তিনি জেলা পুলিশ লাইন্সে হাজির হন। সেখানে মারুফ মিয়ার প্রবেশপত্র ভুয়া বলে নিশ্চিত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারুফ মিয়া মুক্তাগাছায় কম্পিউটারের দোকানে ভুয়া প্রবেশপত্রটি তৈরির কথা স্বীকার করেছেন। পরে রাতেই ওই কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার জব্দ করা। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি।
Advertisement
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান জেলা গোয়েন্দা শাখার এ কর্মকর্তা।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসজে/জিকেএস