প্রতারণার মাধ্যমে জমি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থেকে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান আইমুদ্দিন (৫৪) নামে এক ব্যক্তি। এরপর তার ছেলে অপহরণ মামলা করেন জমি ক্রেতার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিপক্ষও পাল্টা মামলা করেন। প্রতিপক্ষের মামলায় আইমুদ্দিনের দুবছরের জেল হয়। কিন্তু তিনি নিখোঁজ থাকায় তাকে সে মামলায় পলাতক দেখানো হয়।
Advertisement
ঘটনাটি ২০১৩ সালের। অবশেষে অপহরণ নাটকের আট বছর পর পুলিশ গ্রেফতার করেছে আইমুদ্দিনকে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে রোববার দিনগত রাতে ঘোড়াঘাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাখিমুজ্জামান রানা এবং কনস্টেবল শরিফ অভিযান চালিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার নয়াগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার আইমুদ্দিন ঘোড়াঘাট উপজেলার রূপসী পাড়া (ভেকসি) গ্রামের বাসিন্দা।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে আইমুদ্দিন তার প্রতিবেশী মৃত তাছের আলী প্রধানের ছেলে মোজাহার আলীর কাছে ৪২ শতক জমি বিক্রির জন্য চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী মোজাহার আলী ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা আইমুদ্দিনকে দেন। তবে জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে মোজাহার আলী দেখতে পান কাগজে ৪২ শতকের পরিবর্তে ৩৬ শতক লেখা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। জমির মালিক আইমুদ্দিন কৌশলে তার জমি ছেলে-মেয়ের নামে লিখে দিয়ে আত্মগোপন করেন। পরে তার ছেলে আব্দুল আজিজ আদালতে গিয়ে মোজাহার আলী ও তার দলবলের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন।
Advertisement
ওসি আরও বলেন, ওই মামলায় জামিনে এসে মোজাহার আলী জমি ক্রয়ে জালিয়াতির অভিযোগ এনে আইমুদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিচার চলাকালে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত আইমুদ্দিনের দুবছরের সাজা দেন। কিন্তু আইমুদ্দিন নিখোঁজ থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানো যায়নি। ওসি আবু হাসান কবির বলেন, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আইমুদ্দিন স্বীকার করেছেন ২০১৩ সালে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের পর ঘোড়াঘাট থেকে পালিয়ে তিনি প্রথমে বগুড়া এবং পরে পাবনা জেলার সাঁথিয়া থানার কাশিনাথপুর এলাকায় দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। সেখানে থাকাকালে চর অঞ্চলের কিছু লোকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং সেই সুবাদে তিনি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার বাকুটিয়া চরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করে তিনি বসবাস করে আসছিলেন।
এমদাদুল হক মিলন/এসজে/এএসএম