ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও ও ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত। এই আদেশের ফলে এখন দুই পৌরসভার নিবার্চন করতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: ইমান আলী এই আদেশ দেন। আজ আদালতে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার ও ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর গফরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পৌরসভার সঠিক সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেন আদালত। সংক্ষুব্ধ এক ভোটারের রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসানের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেন।আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়।তার আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর গফরগাঁও ইউনিয়নের ভোটার মোহাম্মদ আলী রিট আবেদন করেন, যার ওপর মঙ্গলবার শুনানি করে এই আদেশ দিয়েছেন আদালত।পরে ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন সাংবাদিকদের বলেন, গফরগাঁও পৌরসভায় গফরগাঁও ইউনিয়নের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। গফরগাঁও ইউনিয়নের নাম বাদ পড়ায় এ নিয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। আদালত ওই পৌরসভার নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে।এর আগে গফরগাঁও পৌরসভার বর্তমান মেয়র অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট আবেদনটি দায়ের করেন। এছাড়া পৌর সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত চেয়ে অন্য একটি রিট আবেদন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসেম।প্রসঙ্গত, গত ২৪ নভেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ২৩৪ পৌরসভার মধ্যে গফরগাঁওয়েও ভোটগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।অপরদিকে গত ৯ ডিসেম্বর সীমানা জটিলতার কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল পৌরসভার নির্বাচনও স্থগিত করেন হাইকোর্ট।২০০৪ সালে পৌরসভা গঠনের পর এই পৌরসভার আয়তন ছিল ৫ দশমিক ১২ বর্গকিলোমিটার। ২০১৪ সালে তা বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৪৩ বর্গকিলোমিটার করা হয়। এর মধ্যে নতুন ৩৮৪টি হোল্ডিং নম্বর যোগ হয়। এসব হোল্ডিংয়ের বাসিন্দারা পৌরকরসহ সবকিছু পরিশোধ করছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের গেজেটে বর্ধিত অংশের ভোটারদের বাদ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় রানীশংকৈল পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শরীফুল ইসলাম সীমানা নির্ধারণ ও তা গেজেট আকারে প্রকাশ ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন। গত ৮ ও ৯ ডিসেম্বর আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রানীশংকৈল পৌরসভা নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুল দেন।এফএইচ/জেডএইচ/এআরএস/আরআইপি
Advertisement