দেশজুড়ে

আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করে স্বাবলম্বী শওকত

ঝিনাইদহে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করে মীর শওকত আলী স্বাবলম্বী হয়েছেন। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এলাকার ২ শতাধিক বেকার নারী ও পুরুষের। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দুধসর গ্রামে ১২ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেন আইসক্রিমের কাঠি তৈরির কারখানা। কারখানাকে কেন্দ্র করে কাঠ ব্যবসায়ী, ‘স’ মিল শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক ও কারখানা শ্রমিক সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০ জন বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। উদ্যোক্তা মীর শওকত বলেন, ২০০১ সালে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে তিনি ভারতে যান। এক পর্যায়ে বারাসাত ও হুগলিতে কাঠ দিয়ে আইসক্রিমের কাঠি তৈরির কারখানা তার নজরে আসে। কাঠ থেকে কাঠি তৈরির কাজটি বেশ ভালো লাগে তার। কারখানার মালিকের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারেন ব্যবসাটি যথেষ্ঠ লাভজনক। ভারত থেকে ফিরে এসে ২০০৩ সালে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নিজ বাড়িতে তিনি গড়ে তোলেন `মীর ট্রেডিং` নামে একটি কাঠি বানানোর কারখানা।  সে সময় ৩টি কাটিং ও ১টি ফিলিং মেশিন নিয়ে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে কারখানায় ৮ টি কাটিং ও ২টি ফিলিং মেশিনে কাজ হয়। নির্দিষ্ট মাপের কাঠের খণ্ড প্রথমে ফিলিং মেশিনে দিয়ে পাতলা কাঠের পাতে পরিণত করা হয়। পরে এই পাত, কাটিং মেশিনে দিয়ে ছোট ছোট কাঠিতে পরিণত করা হয়। এরপর একটি ড্রামে ঢুকিয়ে কাঠিগুলোকে পালিশ করে রোদে শুকানো হয়। কারখানাতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ লাখ কাঠি তৈরি করা হয়।শওকত বলেন, আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করতে কাঁচামাল হিসেবে কদম, আমড়া, ছাতিম জাতীয় নরম কাঠ ব্যবহার করা হয়। তিনি কাঠি তৈরিতে ভাটাম বা ভেটুল গাছের কাঠ (স্থানীয় নাম) ব্যবহার করেন। কাঠি তৈরির কারখানাটি মেশিন নির্ভর হলেও কাটিং, গ্রেডিং, বান্ডিল ও প্যাকেটজাত করতে বেশ লোকের প্রয়োজন হয়। স্থানীয় বেকার পুরুষ ও নারীরা তার কারখানায় সানন্দে কাজ করেন। শ্রমিকদের ৫ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেয়া হয় বলে তিনি জানান। শওকত বলেন, নারীরা ঘরে বসে কাঠি গ্রেডিং, বান্ডিল বাঁধা ও পাকেটজাতকরণের কাজ করেন। প্রতি বান্ডিলে ১ হাজার কাঠি থাকে। এক বান্ডিল কাঠি তৈরিতে ৩২ টাকা খরচ হয় এবং তা বিক্রি করা হয় ৩৫ টাকায়। কারখানায় উৎপাদিত কাঠি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়া, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয় বলে তিনি জানান। কারখানা শ্রমিক খায়রুল, ইমন, সাগর ও বাবু বলেন, মীর ট্রেডিং এ তারা সানন্দে কাজ করেন। মালিক মীর শওকত তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক দেন। দুই ঈদে বোনাস দেন। ঈদে ছুটির দিনগুলোর বেতনও তিনি দেন। সফল উদ্যোক্তা মীর শওকত বলেন, কারখানার মেশিন ও অন্যান্য উপকরণের মূল্য খুব বেশি নয়। তাই মেধা ও শ্রম দিতে পারলে অল্প পুঁজিতে এ শিল্পে যথেষ্ঠ লাভ পাওয়া সম্ভব।  এসএস/আরআইপি

Advertisement