জাতীয়

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে সিএসও অ্যালায়েন্সের বিবৃতি

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে নাগরিক জোট সিএসও অ্যালায়েন্স।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদা কে চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়।

এসব ঘটনার দ্রুত প্রতিকার দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, সিএসও অ্যালায়েন্সের বিভিন্ন কর্ম এলাকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং সংবাদ মাধ্যম/দৈনিক পত্রিকা/ টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদের ভিত্তিতে তারা লক্ষ্য করেছে যে, সম্প্রতি দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপতৎপরতা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়াসহ নানাবিধ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে যা অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধ ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। দেশের অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ওপর এটা একটা বড় আঘাত।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। উন্নয়নের নানা সূচকে অব্যাহত অগ্রগতির দাবি সত্ত্বেও এ ধরনের অশুভ তৎপরতা ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এসব ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং তদন্ত প্রতিবেদনগুলো দ্রুত জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানায় সংগঠনটি।

Advertisement

বিবৃতিতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, এলাকার জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগ ও পূর্বপ্রস্তুতি থাকার দাবি সত্ত্বেও শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে এ ধরনের ঘটনা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে তাদের দুর্বলতা ও সক্ষমতার অভাবকে দৃশ্যমান করে তুলেছে। এ ঘটনাগুলোর পরম্পরায় এটা স্পষ্ট যে, কিছু চিহ্নিত উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী অত্যন্ত সুকৌশলে ধর্মকে পুঁজি করে এ ঘটনাগুলো ঘটিয়ে চলেছে। আমরা চাই অতি দ্রুত এসব ধর্ম ব্যবসায়ী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে দমন করা হোক।

নাগরিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত জোট সিএসও অ্যালায়েন্স, যা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার ও অন্যান্য অংশীজনের সহায়ক হিসেবে কাজ করছে, এর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা ও গভীর একাত্মতা প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে রাষ্ট্র, সরকার, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনকে সব ধরনের জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে সিএসও অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।

সবার অংশগ্রহণে, সব জনগোষ্ঠীর অধিকারভিত্তিক সহাবস্থানে, ধর্ম-বর্ণ এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার সমুন্নত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সব অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল শক্তি ও ব্যক্তির সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তুলতে বিবৃতিতে আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- সিএসও অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক রাশেদা কে চৌধুরী, বাপার প্রেসিডেন্ট সুলতানা কামাল, ওয়াটার এইডের রিজিওনাল ডিরেক্টর খায়রুল ইসলাম, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক দিবালোক সিংহ, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্, নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশি কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আদিবাসী ফোরামের জেনারেল সেক্রেটারি সঞ্জীব দ্রং, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, সেন্টার ফর ডিজ্যাবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এ এইচ এম নোমান খান, স্বাবলম্বীর (নেত্রকোনা) নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া বেগম, ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (সিডিএফ) চেয়ারপারসন মোরশেদ সরকার, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক এহসানুর রহমান, সিপিডির ফাহমিদা খাতুন, এফএনবির চেয়ারপারসন জাকির হোসেন, সাজেদা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এস এন কৈরী, এডিডি ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম, বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

Advertisement

এছাড়া আরও রয়েছেন- জাগো ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক করভী রাখসান্দ, প্রতিবন্ধী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মনসুর আহমেদ চৌধুরী, এসকেএসের (গাইবান্ধা) নির্বাহী পরিচালক রাসেল আহম্মেদ লিটন, সুশীলনের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা নুরুজ্জামান, বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক ইজাজ আহমেদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এবং ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সেলিনা হোসেন।

এমইউ/এমআরআর/জিকেএস