ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এসময় সব ধরনের ইলিশ শিকার বন্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নানান কৌশলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে চলছে ইলিশ শিকার।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চরভদ্রাসন উপজেলার এমপিডাঙ্গী ভাঙ্গার মাথা থেকে হরিরামপুরের নমুরছাম-চরশালিপুর হয়ে সদরপুরের জলসীমানা এলাকা পর্যন্ত অবাধে শিকার করা হচ্ছে ইলিশ। এ এলাকাজুড়ে ছোট ছোট নৌকায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক জেলে কৌশলে ইলিশ ধরছেন।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় প্রশাসনের অভিযান ও তৎপরতা বেশি থাকে। এ কারণে রাত আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত জেলেরা নিজেরা পাহারা বসিয়ে মাছ ধরছেন। পদ্মায় জাল ফেলে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর জাল তোলার কাজ শুরু হয়। জাল তুলে মাছ সংগ্রহ করতে আরও ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) রাত নয়টার দিকে গোপালপুর ফেরিঘাট থেকে সদরপুরের জলসীমার মধ্যে ৮ থেকে ১০টি নৌকায় মাছ ধরতে দেখা যায়। অনেক জেলেদের প্রকাশ্যে কুপি জ্বালিয়ে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরতেও দেখা যায়।
Advertisement
উপজেলার চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের মুন্সীর চর গ্রামের বাসিন্দা ও জেলে মাহিন মুন্সী (৬০) জানান, এবার অভিযান কম। নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই তারা মাছ শিকার করছেন। তাই মাছ শিকারে খুব বেশি বাধা পেতে হচ্ছে না।
সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকার জেলে রাহাত হোসেন, সালাম সেখ, আলাউদ্দিন খা বলেন, এ এলাকায় অন্তত ২০ জন জেলে রাতে মাছ শিকার করেন। উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক জেলে এভাবে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত।
চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ দিনে কোনো জেলেকে আটক করা হয়নি। তবে অভিযানে ১৮ কেজি ৩০০ গ্রাম ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ওই সময় ৯০ হাজার মিটার বিভিন্ন প্রকার জাল উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য সমিতির এক সদস্য জানান, সোর্সের মাধ্যমে মৎস্য অফিসের অভিযানের খবর জেলেরা আগেই জেনে যায়। যে কারণে অভিযানের সময় কোনো জেলে ধরা পড়ছেন না।
Advertisement
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মাহমুদুল হাসান বলেন, ইলিশ রক্ষা অভিযানে মৎস্য অফিসের ভূমিকা সন্তোষজনক। নদীতে এখন মাছ কম। যার কারণে জেলেরা নদীতে কম নামছেন। এজন্য পদ্মায় অভিযানকালে জেলেদের পাওয়া যায় না। এছাড়া অভিযানের বাজেট কম থাকার কারণে বেশি অভিযান পরিচালনা করতেও সমস্যা হচ্ছে।
এন কে বি নয়ন/ইউএইচ