যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান ও সচিবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক ও রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু এবং শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব হারুন অর রশিদকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধনী এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রস্তুত কমিটির সদস্য হিসেবে সম্মানী বাবদ ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী ২৫ হাজার টাকার বিপরীতে আড়াই হাজার টাকা আয়কর কর্তন করা হয়। ২০২০ সালের ৭ আগস্ট আড়াই হাজার টাকা আয়করের চেকবই প্রস্তুত করা হয়।
Advertisement
হিসাব সহকারী আবদুস সালাম চেকের মুড়িবইয়ে আড়াই হাজার টাকা লিখলেও চেকে প্রাপক হিসেবে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২৫ লাখ ৮০ হাজার ১০ টাকা ইস্যু করে। চেকে সচিব ও চেয়ারম্যান স্বাক্ষর নেন। সেই চেক শরিফুল ইসলাম বাবু তার নিজস্ব অ্যাকাউন্ট ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখায় জমা দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে টাকা ভাগাভাগি করে নেন। এভাবে আয়কর বাবদ ১০ হাজার ৫৩৬ টাকার স্থলে ৯টি চেকের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা আত্মসাৎ করেন আসামিরা। যা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অপরাধ।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের অডিট কর্মকর্তা আবদুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং সাতটি ও শাহীলাল স্টোর নামে দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা চেকের মুড়িবইয়ের সঙ্গে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় এই জালিয়াতি ধরা পড়ে। অথচ মুড়িবইয়ের চেকের অঙ্কের সঙ্গে ইস্যুকৃত চেকের অঙ্কের কোনো মিল নেই।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবোর্ড শাখার ব্যবস্থাপক এসএম শাহিদুর রেজা জানান, ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ঢাকার ফকিরাপুল ঠিকানার চেক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ক্লিয়ারিং চেকের মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জাগো নিউজকে বলেন, আমরা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছি। সরকারের টাকা আত্মসাৎ করে কেউ পার পাবে না।
Advertisement
মিলন রহমান/এসজে/এএসএম