পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল আকনকে (২৩) অপহরণের পর জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নাজমুল বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।
Advertisement
মামলায় ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামের ওই তরুণীসহ অজ্ঞাতপরিচয় ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে পটুয়াখালী সদর থানাকে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলা দায়েরের পর শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে ওই নারী নিজেকে নাজমুলের স্ত্রী দাবি করে নাজমুলের বাবার বাড়ি মির্জাগঞ্জে অবস্থান করছেন। এ ঘটনায় মির্জাগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নাজমুল মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে। অভিযুক্ত ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মো. আউয়ালের মেয়ে।
Advertisement
নাজমুলের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র। তিনি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। আসামি ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে মোবাইলফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখান। কিন্তু নাজমুল রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরদিন অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে সাত থেকে আটজন ব্যক্তি তাকে বলপূর্বক একটি কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। পরে তাকে ওইদিনই শহরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরির পাঁয়তারা করছেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলাটি নথিভুক্ত করতে আদালত থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নাজমুলকে জোর করে বিয়ে করার একটি ভিডিও চিত্র আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখা যায়, একটি কক্ষে একজন তরুণীর (ইশরাত জাহান পাখি) বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন। পেছন থেকে নাজমুলের মাথা ধরে রেখেছেন এক ব্যক্তি। সেখানে আরও কয়েকজনের উপস্থিতি দেখা যায়। ভিডিওতে ওই তরুণীতে নীল কাগজে সই করতে দেখা গেছে। সই করার পর তরুণীকে মিষ্টি খাইয়ে দেন একজন। পরে নাজমুলের মুখে মিষ্টি দিলে তিনি ফেলে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তরুণী ইশরাত জাহান পাখি দাবি করেন, নাজমুলের সঙ্গে তার দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নাজমুল নিজ ইচ্ছায় তাকে বিয়ে করেছেন। তাকে অপহরণ কিংবা জোর করে বিয়ে করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ কারণে বর্তমানে তিনি নাজমুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
Advertisement
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আদালতের নির্দেশে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/এএসএম