হতাশায় দিন কাটছে গাইবান্ধার হাজার হাজার আমন ধান চাষির। ফসলে পোকার উপদ্রব বেড়েছে। আমন ধানের ক্ষেত রক্ষায় বারবার কীটনাশক প্রেয়োগ করার পরও কোনো সুফল মিলছে না। কৃষি পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে কোনো কৃষি কর্মকর্তা কৃষকদের পাশে নেই বলেও কৃষকদের অভিযোগ।
Advertisement
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে বাঁচাতে আলোক ফাঁদ, জৈব কীটনাশক, বালাইনাশক ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শসহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সচেতনতায় মাঠে কাজ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ও কচুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা আমন ধানের ক্ষেত পোকায় আক্রমণের ফলে সাদাটে হয়ে গেছে। কৃষকরা স্প্রে মেশিন দিয়ে ফসলে কীটনাশক দিচ্ছেন।
কচুয়া ইউনিয়নের গাছাবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সাত বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধানের চাষ করেছি। জমি প্রস্তুত, সার, পানি সব দেওয়ার পরে যখন ধান গোলায় তোলার স্বপ্ন দেখছি, ঠিক তখনই ফসলে দেখা দিয়েছে পোকার আক্রমণ। পোকা দমনের চেষ্টায় প্রতিদিন কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে।’
Advertisement
কচুয়া ইউনিয়নের গাছাবাড়ী গ্রামের কৃষক মশিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণে বিঘার পর বিঘা আমন ধানের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাজার থেকে মনগড়াভাবে একাধিক কোম্পানির কীটনাশক সংগ্রহ করে ক্ষেতে প্রয়োগ করেও রক্ষা হচ্ছে না।
কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, কোন রোগের কোন কীটনাশক সেটা তো আমরা জানি না। বাজার থেকে দোকানদারের পরামর্শ নিয়ে কীটনাশক কিনতে হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা আমাদের পরামর্শ দিতেও আসেনি।
গাছাবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, এবছর অনেক আশা ছিল ধানের ফলন ভালো হবে। কিন্তু পোকার আক্রমণে ভালো ফলন তো দূরের কথা, উল্টো উৎপাদন খরচ তোলাই কঠিন হবে।
উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার ফরমান আলী বলেন, রোগের ধরন দেখে কৃষি বিভাগ থেকে কোনো পরামর্শ পাওয়া পাচ্ছে না। কৃষকদের এমন ক্ষতির জন্য কৃষি বিভাগ দায়ী।
Advertisement
তবে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগী অস্বীকার করেছেন সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মাঠ পর্যায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। যেসব কৃষকের জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে তাদের জমিতে গিয়ে পরামর্শসহ কীটনাশক দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে বাঁচাতে আলোক ফাঁদ, জৈব কীটনাশক, বালাইনাশক ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দিতে মাঠে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। যেসব এলাকায় পোকার আক্রমণের কথা জানলাম আমি সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকতাকে ব্যবস্থা নিতে বলবো।”
তিনি আরও জানান, এবছর গাইবান্ধার সাত উপজেলায় মোট এক লাখ ২৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ২৮ হাজার ৯০ মেট্রিক টন।
জাহিদ খন্দকার/এসআর/জেআইএম