খেলাধুলা

নাসুমের অভাববোধ হলো, তিন স্পিনার ফর্মুলাই কী ঠিক ছিল না?

শুরুর আগে একাদশে দুটি বিস্ময়! এ বছর, মার্চ মাস থেকে যিনি টানা খেলেছেন সেই বাঁ-হাতি ওপেনার নাইম শেখ নেই। তার বদলে লিটন দাসের সাথে ওপেনার হিসেবে প্রথম একাদশে সৌম্য সরকার। আর সাকিবের সাথে প্রায় নিয়মিত হয়ে পড়া বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদও একাদশের বাইরে।

Advertisement

মেলানো কঠিন। কারণ, সেই জিম্বাবুয়ে সফর থেকেই নাসুম ছিলেন তিন স্পিনারের একজন। এমনকি ওমান ‘এ’ আর শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও একাদশে ছিলেন এ বাঁ-হাতি স্পিনার।

কিন্তু আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের প্রথম ম্যাচে নাসুমকে ছাড়াই খেললো বাংলাদেশ। বাঁ-হাতি নাসুম নেই। তবে বাকি দুই স্পিনার সাকিব আর শেখ মাহদি পুষিয়ে দিয়েছেন। তারপরও স্কটল্যান্ড ইনিংস শেষে মনে হয়েছে নাসুম থাকলে ভাল হতো। কারণ, সাকিব আর মাহদিকে একদমই স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি স্কটিশরা।

মাহদি বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারে ম্যাথ্যু ক্রুস আর জর্জ মানসিকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে স্কটিশদের পিছনের পায়ে ঠেলে দেন। এ অফস্পিনারের উইকেট সোজা বলে ডানহাতি ক্রস হন লেগবিফোর উইকেট। আর বাঁ-হাতি মানসি সুইপ করতে গিয়ে হন বোল্ড। তারপরও আরও এক উইকেট দখল করেন মাহদি।

Advertisement

এ অফস্পিনার ঝুলিতে জমা পড়ে ৩ উইকেট (১৯ )। আর সাকিবও যথারীতি বল হাতে নিজের রুপটা দেখিয়েছেন। তার বলে তাসকিন ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হলেও সাকিবের নামের পাশে জমা পড়ে ২ উইকেট। তাও মাত্র ১৭ রানে।

শেখ মাহদি আর সাকিব এর ৮ ওভারে উঠেছে মোটে ৩৬। আর তারা উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন ৫ টি। এই ছোট্ট পরিসংখ্যানটি লক্ষ্য করুন। সাকিব আর মাহদি ওভার পিছু দিয়েছেন ৪.৫। তাদের দু’জনার সাঁড়াসি স্পিন আক্রমনে ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারানো স্কটল্যান্ড শেষ পর্যন্ত করেছে ১৪০।

তার মানে বাকি ১২ ওভারে উঠেছে ১০৪ রান। এর মধ্যে অবশ্য অফস্পিনার আফিফ এক ওভারে দিয়েছেন ১০। তার মানে তিন পেসার তাসকিন, মোস্তাফিজুর ও সাইফউদ্দিন মিলে ১১ ওভারে দিয়েছেন ৯৪।

যেখানে তাসকিনের ৩ ওভারে উঠেছে ২৮। মোস্তাফিজ ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩২। এর মধ্যে প্রথম ওভার ছিল মেডেন। আর সাইফউদ্দিনের ৩ ওভারে ৩০ রান নিয়েছেন স্কটিশরা।

Advertisement

এ পরিসংখ্যানই বলে দেয়, কাজের কাজ স্পিনাররাই করে দিয়েছেন। তাদের দ্বিগুণ রান দিয়েছেন পেসাররা। শেখ মাহদি ও সাকিবের বোলিং শেষ হওয়ার পরপরই স্কটল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরেন। তাই প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৫১ রান করা স্কটিশরা পরের ১০ ওভারে করেছে ৮৯ রান। বলার অপেক্ষা রাখে না, পেসারদের আলগা বোলিংয়ের কারণেই অমনটা হয়েছে।

কাজেই বলেই দেয়া যায় বাংলাদেশ ম্যাচে আর একজন বাড়তি স্পিনারের অভাব অনুভব করেছে। সাকিব আর মাহদির সাথে নাসুম থাকলে স্কটিশরা ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ১৪০-এর ঘরে আসতো কি না, সন্দেহ আছে।

ম্যাচের ফল যাই হোক, ওমানের আল আমিরাত স্টেডিয়ামের পিচতো আরঅস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মত হার্ড, ফার্স্ট আর বাউন্সি নয়। এখানে তিন পেসার ফর্মুলার চেয়ে তিন স্পিনার খেলানোই যুক্তিযুক্ত।

সেই প্র্যাকটিস ম্যাচেও দেখা গেছে পেসাররা রান দিচ্ছেন বেশি। আজ তো স্পিনারদের দ্বিগুন রান উঠেছে পেসারদের বলে। তাসকিনকে যেভাবে ইচ্ছেমত খেলেছেন স্কটিশরা, বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুমকে কী অত সহজে খেলতে পারতেন মানসি, ক্রস, রিচি বেরিংটনরা?

এআরবি/আইএইচএস