‘সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। শিবিরের দলীয় প্রকাশনায় তার নাম আছে। এছাড়া জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় অংশ নেওয়া সভার ছবিও আছে।’
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন একই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাইফুল বলেন, ইমাদ সময়ের ব্যবধানে নিজের স্বার্থে খোলস পাল্টে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। ২০১৮ সালের শেষ দিকে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাসিমকে ম্যানেজ করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য হন। এ সময় তৃণমূল আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মী প্রতিবাদ করলে ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুল হাসিম আমলে নেননি এবং এড়িয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, হাসিমকে ম্যানেজ করে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদেও নৌকার মনোনয়ন পেয়ে যান। এমনকি তিনি যুক্তরাজ্য ও দেশে থাকা অবস্থায় তার ফেসবুক আইডি ২০২১ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত সচল রাখেন। ওই আইডিতে সরকারবিরোধী পোস্টও আছে, যা বন্ধ করে বর্তমানে আরেকটি ফেসবুক আইডি চালু করেন।
Advertisement
সাইফুল বলেন, ইকবাল হোসেন ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে। ২০০৩ সালে দলইরগাঁও স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে এম. সাইফুর রহমান কলেজে ভর্তি হয়ে ২০০৪ সাল থেকে ইসলামি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পরে ২০০৬ সালে (আংশিক) তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানা শিবিরের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে সেক্রেটারি থাকাকালীন থানা শিবিরের সভাপতি ছিলেন মুহাম্মদ আব্দুস শাকুর ও ২০০৭ সালে ছিলেন শফিকুল ইসলাম, যা শিবিরের সাংগঠনিক ২০০৯ ও ২০১০ সালের ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০১০ সালের মার্চে যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে ইমাদ দেশে ফিরে জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন ও স্বাধীনতাবিরোধী এ দলের অর্থ তহবিলে অনেক টাকা-পয়সা দান করেছেন।
তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর তৃণমূল আওয়ামী লীগে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তখন তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করে ইকবাল হোসেন ইমাদ বেশকিছু মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন। যে শিবির নেতা ইকবাল হোসেনের কথা বলা হচ্ছে সেই ব্যক্তি তিনি নন। কিন্তু কথাটি চরম মিথ্যাচার। তিনি যে ব্যক্তির কথা বলছেন তার নামও ইকবাল হোসেন। ওই ইকবাল দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের পশ্চিম বর্ণী গ্রামের মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নুরের ছেলে। কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ওলামা লীগের সাবেক সভাপতি মাওলানা আব্দুন নুরকে আনেন সাইফুল। তিনি বলেন, আমার পরিবার কোনোদিন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয় এবং আমার ছেলে ২০০৯ সালে এসএসসি পাস করেছে। সেহেতু ২০০৬-০৭ সালে শিবিরের সেক্রেটারি হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এদিকে, তৃণমূল আওয়ামী লীগের পক্ষে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনকারী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অনুপ্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। তিনি দুই বছর আগে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপিতে তিনি ছিলেন এমন কোনো প্রমাণ নেই। প্রতিপক্ষই মিথ্যাচার করছে।
ছামির মাহমুদ/এসজে/জেআইএম