আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে এ নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। এতে সাংবাদিকরা পাঁচটি নির্দেশনা মেনে চলবেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে; ভোটকেন্দ্রে যাই ঘটুক না কেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না, কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করা যাবে না, সাংবাদিকরা ভোটে প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্যে সংবিধান, নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।ইসির এসব নির্দেশনার সমালোচনা করছেন খোদ সংস্থটির কর্মকর্তারাই। তাদের মতে, প্রথম নির্দেশনার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরের কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পরিবেশনে অসুবিধা হবে। এক্ষেত্রে অনুমতি পেতে বিলম্ব হলে প্রকৃত ঘটনা জানাতে পারবে না গণমাধ্যম। দ্বিতীয় নির্দেশনার ফলে, ব্যালট পেপার বা বাক্স বা নির্বাচনী উপকরণ দুর্বৃত্তরা নষ্ট করলেও সে সংবাদের গভীরতা বা প্রমাণযোগ্যতা কমে যাবে। তৃতীয় নির্দেশনার মাধ্যমে সাংবাদিকদের অনেকটা হুঁশিয়ারিই দেয়া হয়েছে। কেননা, যে কোনো সংবাদেই কোনো না কোনো পক্ষ উপকৃত হয়। অথচ এতে বলা হয়েছে- সাংবাদিকরা ভোটে প্রার্থী বা দলের পক্ষে-বিপক্ষে কোনো কর্মকাণ্ড চালাতে পারবেন না।এক্ষেত্রে প্রকাশিত সংবাদকে কর্মকাণ্ড হিসেবে চালিয়ে দেয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে। চতুর্থ নির্দেশনার ফলে কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বা নির্বাচনী দায়িত্বরত কর্মকর্তা অনিয়ম করলেও তাকে কিছু বলা যাবে না। এক্ষেত্রে অনিয়মকারী কর্মকর্তাকে সুরক্ষা দেয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চম নির্দেশনায়, সরাসরি আইন লঙ্ঘনের পরিণতির ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ অন্য নির্দেশনার যে কোনোটা না মানার অভিযোগ এনে সংবিধান ও আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ থাকছে।ইসির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনাররা দেশের বাইরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে এসে মতামত দিয়েছেন- ইংল্যান্ড, আমেরিকায় ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা ঢুকেই না। কিন্তু এদেশে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশের কারণে নির্বাচনী কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। তাই তাদের বিচরণ নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। আর সে ভাবনা থেকেই নীতিমালা করে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।এইচএস/এসকেডি/আরআইপি
Advertisement