খেলাধুলা

আফগানিস্তানকে হারানোর ফর্মুলা বলে দিলেন আফতাব

মোহাম্মদ আশরাফুলের সাথে তিনিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয়ের অন্যতম রূপকার, নায়ক। ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আফতাব আহমেদের ৪৯ বলে ৬২ রানে হার না মানা ইনিংসের ওপর ভর করেই ১২ বল আগে ৬ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছেছিল বাংলাদেশ।

Advertisement

দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় পর এবার তার দল আবার বিশ্বকাপে মূল পর্বে জিতবে- এমন আশায় বুক বেঁধে আছেন আফতাব। জাগো নিউজের সাথে টিম বাংলাদেশের বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিতে সম্ভাবনা নিয়ে একান্তে কথা বলেছেন এ প্রজন্মের অন্যতম কুশলী এই প্রশিক্ষক।

অনেক কথার ভিড়ে আফতাব দুটি জায়গা চিহ্নিত করেছেন। তার ধারণা, তামিম থাকলে ভাল হতো। তামিম ইকবালের অভাব অনুভুত হবে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল নিয়ে প্রত্যাশার কথা জানাতে গিয়ে আফতাব বলে ওঠেন, ‘যে টিম খেলতে গেছে, সেটা খুবই ভাল। ডেফিনেটলি লাস্ট কয়েকটা সিরিজ জিতে কনফিডেন্স নিয়েই গেছে টাইগাররা। ওভারঅল যদি এই কনফিডেন্স থাকে তাহলে ভাল করার সম্ভাবনাও আছে।’

‘তবে আমার মনে হয় তামিমের অভাববোধ হবে। সবাই তামিমকে ফিল করবে। ওয়ার্ল্ডকাপ এমন একটা জায়গা বা ক্ষেত্র, যেখানে অভিজ্ঞতা একটা বাড়তি পুঁজি, সম্পদ। তামিমের অভিজ্ঞতা সব ফরম্যাট ও সব সময় টিম বাংলাদেশের বড় সম্পদ ও শক্তি। যে কোন কোয়ালিটি বোলিংয়ের বিপক্ষে তামিমের আস্থা ও আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ সব সময়ই আমাদের ব্যাটিংকে করেছে সমৃদ্ধ।’

Advertisement

‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তামিমের উপস্থিতিটা হতে পারতো বড় সম্পদ। তার মত অভিজ্ঞ ওপেনার থাকলে আমাদের টপ অর্ডারটা আরও সলিড থাকতো। আমাদের টিমটা ভাল। শুরুটা ভাল হলে এই দলের কাছ থেকে ভাল পারফরমেন্স আশা করা যায়। সে জায়গায় তামিম থাকলে অবশ্যই ওপেনিংটা ভাল হতো। এখন কী আর করা, তামিম নেই। তার বদলে ইয়াংরা আছে। তারা নিশ্চয়ই তামিমের শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করবে।’

মূল পর্বে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা কতটা? আফতাবের জবাব, কঠিন। একদম বড় গলায় বলা যাবে না, আমরা কেউই বলতে পারবো না যে ওই চার দলকে হারাবো। যারা আছে তারা আমাদের ভাল শেপে রয়েছ। ওই দুই দলের যে সব টি-টোয়েন্টি প্লেয়াররা আছে, তারা কন্টিনিউ পারফরম করে। তারা প্রবল প্রতিপক্ষ। এদের সাথে খেলাটা কঠিন হবে। কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। যদি সামর্থ্যের সেরাটা দেয়া সম্ভব হয়, তাহলেই কেবল জেতা সম্ভব।’

আফগানিস্তানের সাথে কী পেরে উঠবে রিয়াদের দল? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আফতাব বলেন, ‘দেখেন জেতা যাবে না, তা বলবো না। তবে আফগানদের কনফিডেন্স অনেক হাই। তাদের অনেকেই বিশ্বের সব বড় বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলছেন। কাজেই আফগানিস্তানের অনেক প্লেয়ারই এখন নিজেদের এ ফরম্যাটে হাত পাকিয়ে ফেলেছেন। সে কারণেই তারা বেশ আত্মবিশ্বাসী দল। আর আফগানদের মূল শক্তিই হলো তাদের স্পিন ডিপার্টমেন্ট। রশিদ, মুজিব আর নবির গড়া স্পিন আক্রমণটা বেশ ধারালো।’

আফতাবের প্রেসক্রিপশন হলো, আফগানদের হারাতে হলে আগে তাদের স্পিন বোলিং সামলাতে হবে আগে। তার ভাষায়, ‘স্পিন বোলিং আফগানদের অনেক বড় আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের জায়গা। আফগানদের ওই স্পিন আক্রমণ যদি ভোঁতা বা নিস্তেজ করে দেয়া যায়, তবেই তাদের কাবু করা সম্ভব।’

Advertisement

স্পিনাররা আফগানিস্তানের কত বড় অস্ত্র এবং তাদের ওপর টিম আফগানিস্তানের নির্ভরতাই বা কতটা? সেটা ব্যাখ্যা করে আফতাব বলেন, ‘রশিদ, মুজিবুর রহমান আর নবির স্পিন বোলিংটাই আফগানদের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র। যা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ১৩০-১৪০ রানেও বেধে ফেলতে সক্ষম তারা। আবার ১৪০ রানের পুঁজিকে ডিফেন্ড করতেও ওই তিন স্পিনার রাখতে পারেন বড় ভূমিকা।’

‘তাই আফগান বধের সবচেয়ে বড় দাওয়াই ও কার্যকর অস্ত্র হলো তাদের তিন স্পিনারকে ভালোমত মোকাবিলা করা। রশিদ, মুজিব ও নবিকে আস্থার সাথে খেলে ফেলতে পারলে আফগানদের কাবু করা সম্ভব। তাদের মূল কনফিডেন্সটা ওখানেই। তাদের দূর্বল ও কমজোরি করে ফেলতে পারলেই আফগানদের জারিজুরি শেষ। অর্থাৎ ওই তিন স্পিনারের ১২ ওভারই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যত কম সম্ভব উইকেট দেয়া আর ১২ ওভারে যত বেশি রান করা যায়, সেটাই বড় কথা।’

এআরবি/আইএইচএস/