খেলাধুলা

সেরা দলটিই এবার বিশ্বকাপ খেলতে গেছে: নান্নু

তার হাতেই গড়া জাতীয় দল। যে দলটি ওমানে স্বাগতিক ‘এ’ দলের সাথে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলে এরপর প্রাথমিক পর্বে খেলবে ওমান, স্কটল্যান্ড এবং পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এটাই কি সময়ের সেরা দল? দলের গঠনশৈলি নিয়ে তার মূল্যায়ন কী? মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর প্রত্যাশাই বা কী?

Advertisement

সেই ২০০৭ সালে ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর আর মূল পর্বে জেতেনি বাংলাদেশ। এবার কি সে বহুল আকাঙ্খিত জয়ের দেখা মিলবে? বিশ্বকাপে জাতীয় দলের সম্ভাব্য করণীয় নিয়েই কি ভাবছেন জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক?

এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে জাগো নিউজের সাথে একান্তে কথা বলেছেন নান্নু। আসুন শোনা যাক কেমন ছিল সে কথাবার্তা?

জাগো নিউজ: সেই ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ই প্রথম। সেটাই শেষ। এরপর আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয় অধরা। এবার কী হবে?

Advertisement

নান্নু: আগে আমরা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেক অনভিজ্ঞ ছিলাম। ম্যাচ খেলতাম খুব কম। হাতে গোনা অল্প কিছু ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়েই বিশ্বকাপ খেলতে গেছি; কিন্তু এখন আমাদের ছেলেরা অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে। বিপিএল খেলছে নিয়মিত।

এরপর সাকিব-মোস্তাফিজ আইপিএল খেলছে নিয়মিত। বাকি আরও একাধিক ক্রিকেটার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি আসরেও অংশ নিচ্ছে। এ ফরম্যাটে আমাদের ছেলেদের অভিজ্ঞতা এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেই আমাদের দল এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। সুতরাং, সেরা ফলই চাই এবার আমরা।

জাগো নিউজ : এ দলটি কী আপনার চোখে সময়ের সেরা টি-টোয়েন্টি দল?নান্নু: হ্যাঁ, এটাই আমাদের বেস্ট পসেবল সাইড। আমার মনে হয় আমাদের সম্ভাব্য সেরা দলটিই ওয়ার্ল্ডকাপ খেলতে যাচ্ছে।

জাগো নিউজ: আপনার লক্ষ্য কী?নান্নু: আমাদের প্রত্যাশা ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাল ক্রিকেট খেলা। নির্দিষ্ট দিনে আসল সময়ে সেরা খেলাটা খেলতে হবে। তখন রেজাল্টটা পাওয়া যাবে। টি টোয়েন্টি শর্টার ফরম্যাটের খেলা। মোমেন্টামটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি মুহূর্ত, একেকটি ধারা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে কামব্যাকের সময় খুব কম। প্রতিটি সেকেন্ড, প্রতিটি মিনিটে সেরাটার ভিতর থাকতে হবে, তাহলেই রেজাল্ট ভাল হবে। রেজাল্ট বের করে আনা সম্ভব।

Advertisement

জাগো নিউজ: ২০১৯-এর বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত বড় শক্তিকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এবার মূল পর্বে কী এমন কিছুর প্রত্যাশা করছেন? রিয়াদের দল কি এবার প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করে মূল পর্বে গিয়ে কোন প্রতিষ্ঠিত দলকে হারাতে পারবে?

নান্নু: দেখেন আমি ঠিক সেভাবে দেখতে চাই না। এখান থেকে বসে এখন আপনি এর সাথে জিতবো, ওকে হারাবো- এমন ছক কষতে পারবেন না। আপনাকে চিন্তা করতে হবে ম্যাচ বাই ম্যাচ। কন্ডিশন কেমন? কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে দল এক সপ্তাহ আগে ওমান যাচ্ছে। সেখানকার কন্ডিশনে প্র্যাকটিস আছে। গা গরমের ম্যাচও আছে। সেগুলো খেলবে। নিজেরা তৈরি হবে।

তখন একটা টার্গেটের ঠিক করতে যে, আসলে আমরা কতদুর যেতে পারবো। সবগুলো ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। প্র্যাকটিস ম্যাচ যখন থেকে শুরু হয়েছে, তখন থেকেই আসল প্রস্তুতি শুরু। সুইচ অনে থাকতে হবে। সেরা সময়ে সেরাটা দিতে পারলে এই দলের কাছ থেকে সেরা ফলাফল আশা করাই যায়।

জাগো নিউজ: তিনটি টানা সিরিজ জিতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া কতটা সহায়ক হবে?নান্নু : অবশ্যই কাজে দেবে। যে কোন জয় আপনাকে পরের দিন সকালে ভাল খেলতে সাহায্য করবে। অনুপ্রানিত করবে। উৎসাহ জোগাবে ভাল ক্রিকেট খেলার জন্য। সে হিসেবে এ আমি মনে করি যে ছেলেরা অনেক কনফিডেন্স অর্জন করেছে এবং এটা কাজে লাগাতে পারলে সেরাটা পারবো ইনশাল্লাহ।

জাগো নিউজ: টপ অর্ডার নড়বড়ে। তামিম থাকলে কী হতো?নান্নু: যা নেই, তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। তা নিয়ে কথা বলেও লাভ নেই। এখন যারা আছে, তাদের নিয়েই ভাবছি।

জাগো নিউজ: জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে আপনার কোন টেকনিক্যাল পরামর্শ আছে কী?নান্নু: আছে। রাইট টাইমে রাইট কাজটা করা। শর্টার ফরম্যাটে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনরকম এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করতে না গিয়ে নিজ নিজ মেধা ও প্রজ্ঞার ওপর স্থির থেকে নিজের সেরাটা উপহার দেয়ার চেষ্টাই হবে আসল কাজ।

জাগো নিউজ: সাকিব-মোস্তাফিজ আইপিএল খেলে আবার বিশ্বকাপে। কতটা উপকারে আসবে?নান্নু: অবশ্যই উপকারে আসবে। তারা উইকেট এবং কন্ডিশন দেখছে। জানতে পারছে। বুঝতে পারছে। এটা অবশ্যই পজিটিভ। এই এক্সপেরিয়েন্সগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে পারবে। ওয়েদার কন্ডিশন, উইকেট এবং আউটফিল্ড কেমন? সব ধারণা দিতে পারবে।

জাগো নিউজ : আইপিএলের উইকেট দেখে কি মনে হচ্ছে আমাদের দেশের শেরে বাংলার মতই তো নাকি?

নান্নু: আইপিএলের উইকেট দেখেই মনে করবেন না যে বিশ্বকাপেও এমন উইকেটই থাকবে। ভুলে গেলে চলবে না যে সেটা আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আইসিসি ইভেন্ট। আপনি, আমি কেউ জানি না আসলে উইকেট কেমন হবে? কখন কী হয়? আমি মনে করি উইকেটের গতি প্রকৃতি, আচার-আচরণ নিয়ে অযথা চিন্তা করে মাথা নষ্ট করার কিছু নেই। ভাল দিক চিন্তা করতে হবে। ভাবতে হবে আমি সেরা সময় সেরা জিনিসটা পাব। আমার সেরাটা সেরা সময়ে দেব।

এআরবি/আইএইচএস