জাগো জবস

শোক কাটিয়ে বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন ফরিদ

এ কে এম ফরিদুল হকের জন্ম ১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর নীলফামারীতে। বাবা মৃত মো. নওয়াব আলী ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সুপার, মা মোছা. ফাতেমা বেগম গৃহিণী। ফরিদ নীলফামারী উদয়ন শিশু বিদ্যাপীঠ থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করেন। এরপর নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে এসএসসি ও রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

Advertisement

বর্তমানে তিনি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। সম্প্রতি তার বিসিএস জয়, সফলতার গল্প ও ভবিষ্যৎ স্বপ্নের কথা বলেছেন জাগো নিউজকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত—

জাগো নিউজ: ছোটবেলা কেমন কেটেছে? ফরিদুল হক: প্রায় সব মানুষই সুযোগ পেলে তার ছোটবেলায় ফিরে যেতে চায়। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। ওই সময়টা অনেক আনন্দমুখর ছিল। খেলাধুলা, আনন্দ, হই-হুল্লোড় করে কেটেছে সারাক্ষণ। ছোটবেলায় খুব দুরন্ত ছিলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু তেমন মনে নেই।

জাগো নিউজ: পড়াশেনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?ফরিদুল হক: না। তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল না। পরিবারের সবাই পড়াশোনায় ভালো করার উৎসাহ দিতেন। বিশেষ করে আমার মা-বাবা বেশি উৎসাহ দিয়েছেন।

Advertisement

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে? ফরিদুল হক: অনার্স শেষ করার পর যখন বিসিএস সম্পর্কে ধারণা হয়, ঠিক তখনই স্বপ্নের শুরু। তখন মনে হয়, আমাকে বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে।

জাগো নিউজ: আপনার বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই—ফরিদুল হক: আমার জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষা ছিল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। প্রিলি পরীক্ষা ভালো দিতে পারিনি। তখন প্রশ্ন দেখে মনে হয়েছিল, ব্যাংকের চাকরি আমার জন্য নয়। ফিরে এসেই শুরু করি বিসিএসের প্রস্তুতি। ৩৬তম বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ হই। এটিই ছিল আমার প্রথম বিসিএস। লিখিত পরীক্ষার এক মাস আগে আমার জীবনের সব ভালো কাজের অনুপ্রেরণা আমার বাবাকে হারাই। তারপরও ভেঙে পরিনি। শোককে শক্তিতে পরিণত করে লিখিত ও ভাইভায় পাস করে বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই।

জাগো নিউজ: কততম বিসিএসের কোন ক্যাডারে আছেন? ফরিদুল হক: ৩৬তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছি।

জাগো নিউজ: বিসিএসের প্রস্তুতি কেমন নিতে হয়? ভাইভার ধরন সম্পর্কে যদি বলতেন— ফরিদুল হক: ধৈর্য ধরে পড়াশোনায় লেগে থাকাই আসলে বিসিএসের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি শুরুর আগে অবশ্যই বিসিএসের সিলেবাস ও পুরোনো পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। তাহলেই একজন চাকরিপ্রার্থী বুঝতে পারবেন যে, তাকে কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিসিএসের ভাইভা মানেই হচ্ছে নিজেকে জানা। যে যত ভালোভাবে নিজেকে জেনে ভাইভায় অংশগ্রহণ করবেন, তার ভাইভা তত ভালো হবে। নিজেকে জানা বলতে নিজের পরিবার, জন্মস্থান, ক্যাডার চয়েজ, বাংলাদেশ জন্মের ইতিহাস, জাতির পিতা ইত্যাদি বিষয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে। তাহলেই ভালো করা সম্ভব। বিশেষ করে বিসিএসের কোনো কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে প্রস্তুতি নিলেও ভালো হয়।

Advertisement

জাগো নিউজ: কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি? ফরিদুল হক: সব সময়ই অনুপ্রেণা দিয়ে এসেছেন আমার বাবা-মা।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? ফরিদুল হক: উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারি সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চাই।

জাগো নিউজ: সাম্প্রতিক করোনা দুর্যোগে আপনার ভূমিকা কী? ফরিদুল হক: সাম্প্রতিক করোনা মহামারিতে প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ সংকটকালে আমরা কৃষকের পাশে থেকে খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করেছি। আপনি জানেন, করোনা রোগীদের ডাক্তাররা ভিটামিন সিযুক্ত খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ভিটামিন সিযুক্ত খাদ্য উৎপাদনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়াসহ সহযোগিতা করেছি।

এসইউ/জেআইএম