স্পোর্টিং উইকেটে বিশ্বকাপ হবে। তবুও ভারতীয় দল পিচ থেকে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পাবে এই ভেবে নিজেদের দলে রেখেছে পাঁচ পরীক্ষিত স্পিনারকে। তবে এমন চিন্তা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাথায় হয়তো একটিবারও আসেনি। নয়তো কি, মাত্র একজন প্রতিষ্ঠিত স্পিনার হেইডেন ওয়ালশকে নিয়ে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করে তারা?
Advertisement
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে থাকা ফ্যাবিয়েন অ্যালেনকে পুরোদস্তুর ব্যাটার কিংবা বোলার বলা যায় না। নিয়মিত বল ঘুরালেও, উইকেট পান মাঝেমধ্যে। অভিজ্ঞ ক্রিস গেইলও মাঝেমধ্যে স্পিনটা করেন।
এদিকে, একমাত্র প্রতিষ্ঠিত স্পিনার হিসেবেওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে আমিরাতের বিমানে যিনি চাপছেন, সেও আবার দল বদল করে এসেছেন। জন্মসূত্রে হেইডেন ওয়ালশ অ্যান্টিগুইয়ান-আমেরিকান। হেইডেনের প্রথম আন্তর্জাতিক অভিষেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ডাক পান তিনি। খেলতে শুরু করেন ক্যারিবিয়ানদের হয়ে।
উদীয়মান তারকা বলতে, ‘তরুণ’ যারা তারকা হওয়ার পথে তাদেরই বোঝায়। তবে ২৯ বছর বয়সী হেইডেন ওয়ালশের জন্য তো এই তকমা ব্যবহার করা যায়! এই বয়সে অনেকের ক্যারিয়ার পড়ন্ত বেলায় চলে গেলেও, হেইডেনের ক্যারিয়ার শুরুই তো কিছুদিন আগে। বরাবরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল শক্তি তাদের অলরাউন্ডাররা। তবে আমিরাতে মাঝেমধ্যে স্পিনটা বেশ কার্যকরী হয়ে ওঠে বিধায় এবারের বিশ্বকাপে ২৯ বছরের এই তরুণের কাঁধে থাকছে বড় দায়িত্ব।
Advertisement
ক্রিকেট সংস্কৃতির মধ্যেই বেড়ে ওঠা হেইডেন ওয়ালশের। তার বাবা সিনিয়র হেইডেন ওয়ালশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘদিন খেলেছেন। অ্যান্টিগায় জন্মের সুবাদে ক্যারিবিয়ান ডোমেস্টিক ক্রিকেট দিয়েই পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন হেইডেন ওয়ালশ। প্রথম থেকে তার ইচ্ছেও ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলার।
তবে সে সময়ে স্পিন বিভাগে সুলিমান বেন, দেবেন্দ্র বিশু, স্যামুয়েল বদ্রি এবং পরবর্তীতে সুনিল নারিনের কারণে সুযোগ মেলেনি তার। একটা সময় বাধ্য হয়েই তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করে দেন তিনি। দলটার হয়ে ভালো করতেই আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্বাচকদের চোখে পড়েন। এরপরই তার সামনে সুযোগ আসে ক্যারিবীয় জাতীয় দলের হয়ে খেলার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ ওয়ানডে আর ২৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন হেইডেন ওয়ালশ। এই অল্প সংখ্যক ম্যাচ দিয়েই বাজিমাত করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে ৫ ইকোনমি রেট আর ২৩ গড়ে ১৯ উইকেট। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২১ গড় আর সাড়ে ৭ ইকোনমিতে ২৩ উইকেট!
দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে লেগে ছিলেন বলেই, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়নি তার। তবে বৈশ্বিক যে একটা পরিচিতি, সেটা এখনো পাওয়া হয়নি তার। হবে, এবারের বিশ্বকাপ দিয়েই সেটা হবে হয়তো।
Advertisement
উদীয়মান তারকাদের তালিকায় হেইডেনের নাম হয়তো থাকবে না। তবে উইন্ডিজ দল বিবেচনায়, তিনিই একমাত্র উদীয়মান তারকা। আর ২৯ বছরের এই উদীয়মান তারকা লেগ ব্রেকে প্রতিপক্ষকে নাকাল করবে, তার গুগলি বারবার ব্যাটারদের পরাস্ত করবে- এমন প্রত্যাশায় এখন দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ীরা।
এসএস/আইএইচএস/