খেলাধুলা

আমিরাতের বুকে ঝড় তোলার অপেক্ষায় শাহিন আফ্রিদি

যুগে যুগে কম পেসার জন্ম হয়নি পাকিস্তান থেকে, যারা এখনো স্বমহিমায় ভাস্কর। ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইমরান খান, শোয়েব আখতার, ফজল মাহমুদ, সরফরাজ নওয়াজরা একটা বেঞ্চমার্ক সেট করে দিয়ে গেছেন। নিজের কীর্তি দিয়ে স্মরণীয়-বরণীয় হয়েছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

Advertisement

একটা সময় মোহাম্মদ সামি, মোহাম্মদ আসিফ, মোহাম্মদ আমিররাও হাঁটছিলেন কিংবদন্তি হওয়ার পথে। তবে সামির ধারাবিকতাহীনতা আর আসিফ-আমিরের স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়ানো- ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকার বদলে উল্টো অপরাধী হিসেবে স্থান পেয়েছেন তারা। আমির তবুও ওই কেলেঙ্কারির পর জেল-জরিমানা ও নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে পাকিস্তানকে আবার কিছু বছর সার্ভিস দিয়েছেন। সেরাটা দিতে না পারলেও, সেরাই ছিলেন পাক দলে। তবে আসিফ তো একেবারে হারিয়েই যান।

আসিফ-আমিরদের কথা ভাবলে পাক ক্রিকেট সমর্থকদের মনে হতাশার হাওয়া বইলেও, শান্তির পরশ আবার যোগাচ্ছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। নতুনদের মধ্যে তিনি রয়েছেন গ্রেট হওয়ার দৌড়ে। ২১ বছর বয়সী এই পেসারের মাত্র তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার দিয়ে, এখনই এ কথা বলা হয়তো সমীচীন হচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেভাবে নিজের প্রতিভা দেখিয়ে চলেছেন ৬ ফুট ৬ ইঞ্চির এই পেসার, তাতে এমন আশা করা মোটেও অবাঞ্ছনীয় ঠেকছে না।

২০১৮ সালে পাকিস্তানের হয়ে তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয় শাহিনের। এরপর থেকেই জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন তিনি। পরের বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন। বিশ্বমঞ্চে প্রথমবার খেলতে নেমে শাহিনের পারফরম্যান্সে তো সবার চোখ রীতিমতো ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

Advertisement

দলের হয়ে পাঁচটি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। সেই পাঁচ ম্যাচে তার নামের পাশে উইকেটসংখ্যা ছিল ১৬টি। একটা ফাইফারে সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৬/৩৫, সেটা বাংলাদেশের বিপক্ষে। গড় ১৪.৬২, আর প্রতি উইকেট পেতে রান দিয়েছেন মাত্র ১৭ করে। যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যানরা যখন বোলারদের প্রতি ছিলেন নির্দয়, সেখানে বাঁ-হাতি এই পেসার ওভার প্রতি রান খরচ করেছিলেন মাত্র ৪.৯৬ করে।

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির (১৭টি)। তবে আমির ম্যাচ খেলেছিলেন ৮টি। কে জানে, রাউন্ড রবিন লিগের সবগুলো ম্যাচ খেলতে পারতেন শাহিন, তবে হয়তো অভিজ্ঞ এবং দলের মূল পেসার আমিরকেও উইকেটসংখ্যায়, সাফল্য পেছনে ফেলতেন তিনি।

ওয়ানডে বিশ্বকাপে পেছনে ফেলা না হলেও, এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই সুযোগটা থাকছে শাহিনের সামনে। এমনিতেই বল হাতে দুরন্ত ছন্দে আছেন তিনি, তার ওপর এবারের বিশ্বকাপের পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের আশা-ভরসার জায়গা তিনি। মূল স্ট্রাইক বোলার, বিপদ থেকে উদ্ধারের অস্ত্র। শাহিন নিজেও জানেন সেটা।

জানেন বলেই, বিশ্বকাপের মঞ্চে আবার জ্বলে উঠতে নিজের যতটুক করার সেটা করবেন। করতে হবে তাকে। তবেই না, পাকিস্তান দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটা দেখতে পারবে।

Advertisement

এসএস/আইএইচএস/