খেলাধুলা

বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষুধা লেগেছে ডি ককের

একটার পর একটা বৈশ্বিক আসর যায়, তবে নামের পাশ থেকে ‘চোকার্স’ উপাধিটা আর সরাতে পারে না দক্ষিণ আফ্রিকা। ফি বছর দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দিলেও, বিশ্বকাপ বা বড় কোনো টুর্নামেন্টে গেলেই কি যেন হয় প্রোটিয়াদের। সময়ের সেরা খেলোয়াড়দের দলে পেয়েও প্রত্যেকবার সমর্থকদের হতাশায় ডোবানোই যেন তাদের কাজ। তবে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে দলটার নামের পাশে থেকে অপবাদ ঘোচাতে চান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কুইন্টন ডি কক।

Advertisement

সব ঠিক থাকলে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হিসেবেই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতেন ডি কক। তবে তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্ব দেয়ার চাপ থেকে তাকে দূরে রাখতে কিছুদিন আগে অধিনায়কত্বে রদবদল আনে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা।

সন্দেহাতীতভাবে, দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটার এই বাঁ-হাতি ওপেনার। সেরা ব্যাটার যাতে চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া সিএসএর।

নতুন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার অধীনে ধারাবাহিকভাবে দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দিচ্ছে প্রোটিয়ারা। রানের মধ্যে আছেন ডি ককও। সবচেয়ে বড় কথা এবার একঝাঁক নতুন ক্রিকেটার নিয়ে বিশ্বকাপ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটাই স্বপ্ন দেখতে বাধ্য করছে ডি কককে। বিশ্বকাপ ভাবনা নিয়ে কিছুদিন আগে তিনি বলছিলেন, ‘সেখানে (সংযুক্ত আরব আমিরাতে) বিশ্বকাপ জয়ের খুদা এখন আমার ভেতর কাজ করছে। বর্তমান এই দলটা আমাকে আশা যোগাচ্ছে। আমার মতে, আমরা সঠিক পথে হাঁটছি।’

Advertisement

সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের মাত্র তিনজন এবারের বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছেন। ডেভিড মিলার এবং কাগিসো রাবাদা ছাড়া সেই ছোট্ট তালিকায় নাম আছে ডি ককেরই। যে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন তিনি দেখছেন, তা পূরণে অভিজ্ঞ হিসেবে তো তাকেই এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে।

ডি ককের দ্বারা সেটা অসম্ভব কিছুও না। দারুণ ধারাবাহিক এই ব্যাটার-কিপার। জাতীয় দলের হয়ে ৫৭ টি-টোয়েন্টি খেলার পর তার ৩৫ গড় সে কথাই বলে। অন্য সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই ফরম্যাটে তার গড়টা ৩৫ এর কাছাকাছি। স্ট্রাইকরেটও টি-টোয়েন্টিসুলভ, ১৩৮!

শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর সব অর্থেই ভুলে যাওয়ার মতো ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। সুপার টেন থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের। অথচ ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন ডি কক। ওই যে, দল থেকে বাকিদের সহায়তা না পেলে যা হয় আরকি! ভারতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে চার ম্যাচ খেলে ডি কক করেছিলেন ১৫৩ রান। তবে বাকিদের ব্যর্থতায় ডি ককের এই রান প্রোটিয়াদের কোনো কাজেই লাগেনি।

অথচ আগের বিশ্বকাপেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই আসরেও ছিলেন ডি কক। তবে ব্যাট হাতে বড্ড অনুজ্জ্বল ছিলেন তিনি। যদিও বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে ফ্যাফ ডু প্লেসি, জেপি ডুমিনি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ইমরান তাহিররা দুর্দান্ত খেলায়, অনেক পথ সহজেই পাড়ি দিতে পেরেছিল দক্ষিণ।

Advertisement

সবশেষ বিশ্বকাপে দলগতভাবে একরাশ হতাশাকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়লেও, পাঁচ বছরে অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারে অনেক রসদই জোগাড় করেছেন ডি কক। মাঝে দিয়েছেন দলকে নেতৃত্ব। পরিণত হয়েছেন অনেক। এরপর আবার বর্তমান দলের 'টিম' হয়ে খেলার মানসিকতা। ডি ককের বিশ্বকাপ স্বপ্ন দেখা আপাতদৃষ্টিতে তাই অমূলক কিছু নয়।

এসএস/আইএইচএস/