খেলাধুলা

বাটলার ঝড় দেখার অপেক্ষায় ইংলিশরা

পল কলিংউডের নেতৃত্বে ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে বড়ই বিবর্ণ হতে থাকে ইংলিশ ক্রিকেট। ২০১১ ও ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় সেটারই স্বপেক্ষে প্রমাণ বহণ করে। তবে সেই ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলার মিশনে একঝাঁক তরুণ এবং সাহসী ক্রিকেটারকে সুযোগ করে দেয়া হয়, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন জস বাটলার।

Advertisement

মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু থেকেই সংক্ষিপ্ত ওভারের ক্রিকেটে বেশ নামডাক কুড়াতে থাকেন বাটলার। যে কোনো পজিশনে নেমে হাত খুলে খেলার সামর্থ্য থাকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই দলের নিয়মিত সদস্যদের একজন হয়ে ওঠেন এই কিপার ব্যাটসম্যান। বোলারদের তুলোধুনো করতে তার যেন জুড়ি মেলা ভার। বর্তমান সময়ের ক্রিকেটের চাহিদা মেটাতে পারেন বলেই ইংল্যান্ড দলে তার ওপর এত আস্থা।

ইংল্যান্ডের বদলে যাওয়ার শুরু ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকেই। ভয়ডরহীন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যেন পসরা সাজিয়ে বসে ইংলিশরা। সেই দলের, সেই ভয়ডরহীন ক্রিকেটারদের একজন বাটলার নিজেও।

ইংল্যান্ডের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার পথে তার এমন ব্যাটিং রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একে তো ছিলেন দলের সহ-অধিনায়ক। সে দায়িত্ব দারুণভাবে পালনের সঙ্গে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ২০১৯ বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৩১২ রান। গড় ৩৪.৬৬। তবে বাটলারের স্ট্রাইক রেটই বিশ্বকাপ জয়ে তার অবদানের প্রমাণ দেয়। ১২২ স্ট্রাইক রেটে বিশ্বকাপ জুড়ে ব্যাটিং করেন তিনি। অনেক ক্রিকেটারের তো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও এত দারুণ স্ট্রাইক রেট নেই।

Advertisement

শুধু ওয়ানডে বিশ্বকাপ কেন, তিনটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা এই ব্যাটার বৈশ্বিক মঞ্চেও বারবার নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। দলের প্রয়োজনে মেলে ধরেছেন। ইংল্যান্ডের ২০১৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পেছনে অনেক বেশি অবদান ছিল এই তারকার। এখন পর্যন্ত তিন বিশ্বকাপ খেলে, বাটলার প্রায় ২৮ গড়ে ৩০৫ রান করেছেন। কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপেও তার স্ট্রাইক রেট মুগ্ধ করার মতো- ১৩৯.২৬!

সাম্প্রতিক সময়টা পক্ষে না গেলেও, বড় মঞ্চের খেলোয়াড় বাটলার। জানেন চাপ কিভাবে সামাল দিতে হয়। আরব আমিরাত ও ওমানে বসতে যাওয়া এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাই ইংল্যান্ডের প্রধান অস্ত্রের একজন হতে যাচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে দলের অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান যখন চূড়ান্ত রকমের অফ-ফর্মে, তখন দলের জন্য কিছু করার তাড়না এখন আরও বেশি বাটলারের।

ওপেনিং থেকে শুরু করে ব্যাটিং অর্ডারের যে কোনো পজিশনেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলার অভ্যাস আছে বাটলারের। দলকে ঝড়ো শুরু এনে দেয়া কিংবা ইনিংসের দুর্দান্ত ইতি টানা- দু’দিকেই সফল তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো তিনিও শট খেলতে পারেন মাঠের চারদিকে। যে কারণে বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে তার চাহিদা আকাশ ছোঁয়া। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), অস্ট্রেলিয়ান বিগ ব্যাশে নিয়মিত তিনি। খেলেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল)।

Advertisement

সংক্ষিপ্ত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে অনেকগুলো রেকর্ড বাটলারের দখলে। ওয়ানডেতে জাতীয় দলের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি তারই। তার এমন ঝড়ো ব্যাটিং এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বজায় থাক, ইংলিশ ভক্তকূল এখন সেটাই চায়। বাটলার নিজেও চাইবেন আরও একবার নিজের রুদ্রমূর্তি দেখাতে। তবেই না, গেল বিশ্বকাপের ফাইনালের দুঃখ ভুলে যাওয়ার উপলক্ষ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপার পথে এগোতে পারবে থ্রি-লায়ন্সরা।

এসএস/আইএইচএস/