বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী তৎকালীন শান্তি কমিটির সভাপতির ছেলে শহিদুল বারী খান রব্বানী নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তাকে দল থেকে মনোনীত করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি আবারও বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
এদিকে মনোনয়নের প্রতিবাদে শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান নামের একটি সংগঠন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সোনাতলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন জাকির।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, শহিদুল বারী খান রব্বানীর বাবা মৃত সামছুল হক খান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতাকারী ও উপজেলা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। উপজেলার রাজাকারদের তালিকায়ও তার নাম ১ নম্বরে আছে। সেই পরিবারের সন্তান রব্বানীকে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ায় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এ সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন বুলু জাগো নিউজকে বলেন, স্বাধীনতার সময় রব্বানী খানের বাবা স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। তিনি সে সময় শান্তি কমিটির সভাপতি হওয়ায় তার নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘরে আগুন লাগানো হয়। সোনাতলা পৌর এলাকায় ১৫ জন রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীর নাম রয়েছে। এমন একটি নামের তালিকা ২৩ সেপ্টেম্বর সোনাতলা পৌরসভার স্মারকে উল্লেখ রয়েছে।
আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান সংগঠনের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শহিদুল বারী খান রব্বানীকে নৌকা প্রতীক পাইয়ে দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান আগে থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলে কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়ে এ ঘোষণা করানো হয়েছে। এখন সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিষয়টি বিবেচনা করে কেন্দ্র এ মনোনয়ন পরিবর্তন করবে বলে আশাবাদী।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী রব্বানী খান দাবি করেন, আমার বাবা কখনো শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন না। তৎকালীন সোনাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। ষড়যন্ত্র করে ওই তালিকায় বাবার নাম তোলা হয়েছে।
সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন জাগো নিউজকে বলেন, রব্বানীর বাবা কখনো রাজাকার ছিলেন না। বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আকন্দ নান্নু ষড়যন্ত্র করে রব্বানীর প্রয়াত বাবা সামছুল হক খানসহ অনেককে শান্তি কমিটির সভাপতি ও সদস্য বানিয়েছেন।
Advertisement
এসজে/এমএস