লিবিয়ায় অভিবাসী বন্দিশালায় চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে রক্ষীদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থা বলেছে, শরণার্থী এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংস অভিযানের মধ্যেই এ নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) শুক্রবার বলেছে, ত্রিপোলির ঘোট শাল বন্দিশালায় উপচে পড়া ভিড়ের কারণে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এসময় রক্ষীদের গুলিতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে খবর আল-জাজিরা।
Advertisement
লিবিয়ায় জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থার প্রধান ফেদেরিকা সোডা বলেন, বন্দিশালায় রক্ষীরা গুলি চালিয়েছে এবং এতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ বন্দিশালার বেড়ার ফাঁক দিয়ে স্রোতের মতো বেরিয়ে যাচ্ছে এবং ত্রিপোলির রাস্তায় দৌড়াচ্ছে।
লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের বন্দিশালায় বিপুল সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী আটকে থাকার প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে সাঁড়াশি অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ। এসময় পাঁচ হাজারেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়, যাদের অনেকে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী।
Advertisement
মানবপাচারকারীদের হাতে কিছু বন্দি গুরুতর শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অভিযোগ ওঠার মধ্যে এ অভিযানে নামে স্থানীয় প্রশাসন। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি গ্রেফতারদের মধ্যে অনেকেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সমর্থিত সরকারের কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়। পরে তাদের অভিবাসী বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের অমানবিক পরিবেশে রাখা হয়েছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ তুললে অনেককে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হয়।
লিবিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রেফতাররা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের, যাদের অনেকেই যুদ্ধ এবং নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে এসেছে। অবৈধ অভিবাসন ও মাদকপাচার চক্রের সঙ্গে এদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
চিকিৎসা সহায়তাদানকারী দাতব্য প্রতিষ্ঠান এমএসএফ এক বিবৃতিতে জানায়, গত সোমবার (৪ অক্টোবর) থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির বন্দি কেন্দ্রে মানুষের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি হয়ে গেছে। একটি বন্দিকেন্দ্রে ৫৫০ জনের বেশি নারী রাখা হয়েছে। একই সেলের মধ্যে গর্ভবতী নারী, শিশু এমনকি নবজাতক শিশুকেও রাখা হয়েছে। সেখানে শতাধিক বন্দিকে ব্যবহার করতে হচ্ছে একটি টয়লেট।
Advertisement
এমএসএম/এএসএম