শিক্ষাখাতে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তাদের এই অভিযোগের প্রতিবাদ জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ বিষয়ে গণমাধ্যমে জবাব দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement
বুধবার (৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকতা এম এ খায়েরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা সংক্রান্ত সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সার্বিক বিষয় তুলে ধরবেন।
সম্প্রতি টিআইবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষাখাতের বিভিন্ন কাজে সাড়ে তিন লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। এসব নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ আদায়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) ও কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে গভর্নিং বডির (জিবি) সংশ্লিষ্টরা জড়িত বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে এমপি বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির হস্তক্ষেপে সভাপতি মনোনীত করা হয়। এতে অনেকাংশে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সম্পৃক্ত হতে পারে না, যা শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কমিটির সভাপতি-সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অক্ষরজ্ঞানহীন লোক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এতে করে শিক্ষকদের সঙ্গে কমিটির সদস্যদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক সুপারিশকৃত সহকারী শিক্ষকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগে দুই থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। এ টাকা দিতে হয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে গভর্নিং বডির সঙ্গে জড়িতদের।
এসব নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ আদায়েও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে গভর্নিং বডির সংশ্লিষ্টরা জড়িত রয়েছে।
টিআইবি জানায়, শিক্ষক এমপিওভুক্তিতে পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ পর্যন্ত টাকা দিতে হয়। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষার কাজে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের এক মাসের এমপিওর টাকা দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) সংশ্লিষ্ট কমর্কতাদের। আর সরকারি স্কুলের শিক্ষক বদলিতে এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় মধ্যসত্ত্বভোগী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। আর প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতির জন্য এক লাখ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ এবং স্বীকৃতি প্রদানে পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হয় নিয়মের বাইরে। অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধে কয়েকদফা সুপারিশ করেছে টিআইবি।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়, এ বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সেখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
এমএইচএম/ইএ/জিকেএস