দেশজুড়ে

জুম মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকায় ৩৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে শোকজ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্বপ্রস্তুতি ও পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে গত ৯ সেপ্টেম্বর ছিল রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ জুম মিটিং। এতে জেলার সব মাধ্যমিক ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনা অমান্য করে জুম মিটিংয়ে অংশ না নেওয়ায় তানোর উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও মাদরাসার সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাগো নিউজকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানকারী তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান।

তিনি জানান, ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের ওপর একটি জুম মিটিং হয় গত ৯ সেপ্টেম্বর। সেখানে ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান অনুপস্থিত ছিলেন, যা সরকারি নির্দেশনা অমান্যের সামিল। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসা আকস্মিক পরিদর্শনে গেলে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া ক্লাসরুমসহ প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখা গেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের মাঠেই বড় বড় ঘাস হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের সবাই এ বিষয়গুলো নিয়ে ছিলেন উদাসীন। তাই জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ‘সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কলেজগুলোতে সব শিক্ষক-কর্মচারীদের সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু স্কুল খোলার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ সরকারি নির্দেশনা মানা হয়নি। এসব বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে এ অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে।

Advertisement

তিনি জানান, এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৯, ১০ ও ২৭ সেপ্টেম্বর ধারাবাহিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রধানদের দায়িত্ব অবহেলা পাওয়ায় ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। নোটিশ পাওয়ার তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এরই মধ্যে অনেকেই জবাব দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে জাগো নিউজের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিনের। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা যথাযথ মান্য করানোর জন্যই সতর্কতামূলকভাবে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা সবাই নোটিশের জবাব দিয়েছেন এবং তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। প্রাথমিকভাবে তাদের বিষয়টি ক্ষমার দৃষ্টিতে আমলে নিয়ে পরবর্তীতে যেন এমন না করেন সেই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৮টি মাদরাসা, ১৪টি কলেজ, একটি কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট ও তিনটি কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা সদরে ‘অর্কিড স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ নামের একমাত্র বেসরকারি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

ফয়সাল আহমেদ/এফআরএম/জেআইএম

Advertisement