ফিচার

হাত-পায়ে ভর দিয়েই লাখ লাখ টাকা উপার্জন!

মানুষ হয়েও চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে জীবন কাটাতে হয়েছে তার। বিরল রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন এলা হারপার। ১৮৭০ সালের ৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের হেন্ডারসনভিলে জন্মগ্রহণ করেন।

Advertisement

জন্মের পর ডাক্তাররাও তাকে দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছিলেন। জন্মগতভাবে তিনি ‘জিনু রিকার্ভ্যাটাম’ (বাঁকা হাঁটু) রোগে ভুগছিলেন।

তার বাবা উইলিয়াম হারপার ছিলেন একজন কৃষক ও পশুপালক। অন্যদিকে তার মা মিনার্ভা অ্যান চাইল্ড্রেস শিশুদের দেখাশোনা করতেন। সুমনার কাউন্টিতে বেড়ে ওঠা চার ভাই-বোনের মধ্যে এলাই জন্মগত ত্রুটির শিকার হন।

তবে জানলে অবাক হবেন, এই প্রতিবন্ধী মেয়েটিই কি না সপ্তাহে উপার্জন করতেন ৫ লাখ ডলার। এমনকি তাকে দেখতে ভিড় জমাতো লাখ লাখ দর্শনার্থী।

Advertisement

হাত-পায়ে ভর দিয়েই এলা সাধারণ মানুষের চেয়েও দ্রুত গতিতে দৌড়াতে পারতেন। জন্মের পর থেকেই তাকে দেখতে সবাই ভিড় জমাত।

এরপর এলা নিজের প্রতিবন্ধকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি যোগ দেন সার্কাস দলে। সার্কাস তার জীবনে চূড়ান্ত খ্যাতি এনে দেয়। ঐতিহাসিক রেকর্ড অনুসারে, এলা হারপার ১৮৮২ সালের অক্টোবরে সার্কাসে কর্মজীবন শুরু করেন।

তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। প্রথমে নিজ এলাকার আশেপাশে শো করলেও পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যজুড়ে অনুষ্ঠান করেন তিনি।

এরপর ১৮৮৬ সালে বিখ্যাত এক শো-ম্যান ডাব্লিউ এইচ হ্যারিস এলাকে দেখেন। তিনি এলাকে নিকেল প্লেট সার্কাসে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান।

Advertisement

এলাও সুযোগটি হাতছাড়া করেননি। এ শোতে তাকে একটি উটের সঙ্গে পারফরমেন্স করতে দেওয়া হয়েছিল। এলার হাঁটু পেছনের দিকে বাঁকিয়ে থাকার কারণে তাকে উটের মতোই দেখাতো।

এই শোয়ের পর সে ‘ক্যামেল গার্ল’ হিসেবে পরিচিতি পায়। এলা তার হাত ও পা ব্যবহার করে নিজের চারপাশে হাঁটতে পারতো। শারীরিক এই ত্রুটির কারণেই তার প্রতি মানুষের কৌতূহল জন্মায়।

এরপর এলা হারপারের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। লাখ লাখ দর্শক তাকে এক নজর দেখার অপেক্ষায় থাকতো। প্রতিটি পারফর্ম্যান্সের আগেই তার শোয়ের সব টিকিট বিক্রি হয়ে যেতো।

তখন এলা প্রতি সপ্তাহে ২০০ ডলার উপার্জন করতেন। যা বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার ডলারের সমান। তবে ১৮৯০ সালে হঠাৎই সার্কাস শো থেকে অব্যাহতি নেন এলা।

জানা যায়, এলা তার নিজ বাড়িতে ফিরে যান। এরপর তিনি রবার্ট সেভলি নামের একজন স্কুল শিক্ষককে বিয়ে করেন ১৯০৫ সালে।

এরপর তারা টেনেসির ন্যাশভিলতে বসবাস শুরু করেন। সর্বশেষ তথ্য মতে, সেখানেই ১৯২১ সালে মৃত্যুবরণ করেন এলা হারপার।

সূত্র: অল দ্যাট ইন্টারেস্টিং

জেএমএস/জিকেএস