অর্থনীতি

ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বাড়ায় চাঙ্গা শেয়ারবাজার

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় টানা আট দিন দরপতনের পর অবশেষে উত্থান ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে।  উভয় বাজারে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এদিন সব ধরনের সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার ফলেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। এদিকে রোববার পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় ব্যাংক-কোম্পানির বিনিয়োগ সীমার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় সাব-সিডিয়ারি কোম্পানিতে মূলধনের বিপরীতে ব্যাংকের ইক্যুয়িটি বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে না বলে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নির্দেশনার ফলে ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে সাড়ে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়বে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। এর প্রভাবেই দেশের শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১০১ পয়েন্টে এবং ডিএস ৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ১৪১ কোটি টাকা বেশি। রোববার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সোমবার লেনদেন হয়েছে ৩২০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৪৭টির, কমেছে ৫১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর।অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৮ হাজার ৫০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া সিএসই ৫০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২১ পয়েন্টে, সিএসই ৩০ সূচক ১০৯ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৪০৭ পয়েন্টে, সিএএসপিআই সূচক ২০৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৯৭৯ পয়েন্টে এবং সিএসআই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৯৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট। এর মধ্যে বেড়েছে ১৮৮টির, কমেছে ৩৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর।শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্দেশনা সম্পর্কে এআইবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মো. গোলাম সারোয়ার ভুঁইয়া বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের একটা চাপ ছিল। এই সার্কুলার জারির ফলে সমন্বয়ের চাপ কিছুটা কমেছে। যারা আগে সমন্বয় করতে পেরেছে তাদের জন্য নতুন বিনিয়োগ সৃষ্টি হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও আগের চেয়ে সক্রিয় হবে। এতে বাজার তার গতি ফিরে পাবে বলে মনে করেন তিনি।উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, আগামী ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সাব-সিডিয়ারী কোম্পানিতে প্রদত্ত মূলধনের বিপরীতে ধারণকৃত ইক্যুয়িটি শেয়ার সলো ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে না।এসআই/এসএইচএস/আরআইপি

Advertisement