জাতীয়

ই-অরেঞ্জ-এসপিসির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা

ই-কমার্সের নামে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনাকারী ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস’ ও ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

Advertisement

সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, এসপিসি ও ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়ায় কলাবাগান ও গুলশান থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেছে সিআইডি। প্রতিষ্ঠান দুটি গ্রাহকের টাকা তুলে অন্যান্যখাতে ব্যবহার করেছে যেটা মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ।

এর আগে রোববার (৩ অক্টোবার) রাতে রাজধানীর বেইলি রোড থেকে এসপিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আল-আমিন ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এবং তার স্ত্রী শারমীন আক্তারকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

Advertisement

এসপিসির বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলায় সিআইডি অভিযোগ করেছে, প্রতিষ্ঠানটি তাদের কোম্পানির হিসাব থেকে মোট ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের প্রমাণ মিলছে। এ অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে ডেসটিনির সাবেক কর্মী আল-আমিন প্রধানকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের (এমডি ও সিইও) আল-আমিন ছাড়াও পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অবৈধভাবে অনলাইনে এমএলএম ব্যবসা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তখন ডিবি তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। তাদের বিরুদ্ধে ২৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছিল ডিবি।

ওই মামলায় দুই মাসের মধ্যে আদালত থেকে জামিন পান আল-আমিন। জামিন পেয়ে পুনরায় তিনি এ ব্যবসা শুরু করেন। সিআইডির হাতে ৩ অক্টোবর গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে ২২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, সাম্প্রতিক কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রতারণাকাণ্ডে অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছে গ্রাহক, ব্যবসায়ী এবং এ খাত সংশ্লিষ্টরা। ই-কমার্স সাইটগুলো ঈদ ধামাকা, সাইক্লোন অফার, ডাবল অফারসহ বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে টাকা প্রবেশ ও বের করা প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা থাকলেও সেসব বিষয়েও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে সিআইডি।

Advertisement

হুমায়ুন কবির বলেন, করোনা মহামারির সময় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করে। মানুষের সেই আবেগকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যক্তি মুনাফা বা অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। তবে আমরা তা হতে দেবো না। আমরা চাই এ সেক্টর আরও প্রসারিত হোক।

এরই মধ্যে ধামাকা ও ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে, ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ২৩২ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা করেছে সিআইডি। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকের ১১শ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলা গুলশান থানায় হয়। এসপিসির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের আগে তিনটি এবং সিআইডির একটিসহ মোট চারটি মামলা তদন্তাধীন। এসপিসির গ্রাহক সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি। তাদের গ্রাহকদের বেশিরভাগ ছিল ছাত্র ও অল্প বেতনের মানুষ। প্রতিষ্ঠানটি, মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, ল্যাপটপ, মোবাইলে অফার দিতো। প্রথম দফায় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ করলেও পরে গ্রাহকদের পণ্য বা টাকা কিছুই ফেরত দিতো না প্রতিষ্ঠানটি।

এরই মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে সিআইডি তদন্ত করছে ১৮টি।

টিটি/এমএএইচ/এএসএম