মো. আল আমীন ও পরিচালক শারমীন আক্তার ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই গড়ে তুলেছিলেন এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেডকে। আল আমীন মূলত ডেসটিনি-২০০০-এর উচ্চ পর্যায়ের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন। এর আগে গত নভেম্বরে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন।
Advertisement
সোমবার (৪ অক্টোবর) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেলের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম) হুমায়ুন কবির এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতারণা, মানি লন্ডারিংসহ চারটি মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেডের সিইও মো. আল আমীন ও পরিচালক শারমীন আক্তারকে বেইলি রোড থেকে গ্রেফতার করে সিআইডির একটি টিম। সিআইডির কাছে এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে চারটি মামলার তথ্য রয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার দায়রুল আমিনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এলআইসির একটি চৌকশ টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তাদের কাছ থেকে সাদা রঙের একটি এক্সিও প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
হুমায়ুন কবির বলেন, তারা বিভিন্নভাবে টাকা আয় করার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানির হিসাব থেকে প্রায় এক কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাচার করার চেষ্টা করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের সিইও জানান, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ৫/৬ কোটি টাকার অর্ডার পায়। এ পর্যন্ত তারা এক কোটি গ্রাহক থেকে ২২ কোটি টাকা নিয়েছেন।
তিনি জানান, সম্প্রতি কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাকাণ্ডে অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছে গ্রাহক-ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। ই-কমার্স সাইটগুলো ঈদ ধামাকা সাইক্লোন অফার, ডাবল অফারসহ বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়ে নতুন মোটরসাইকেল, মুঠোফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিকস পণ্য দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং শর্ত সাপেক্ষে ৮০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ-ব্যাক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শর্ত ভঙ্গ করার প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানি লন্ডারিং ও প্রতারণা আইনে মামলা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরে বেশি অর্ডারের মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ নেওয়ার পর তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে।
অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকরা যখন বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিকার দাবি করে বক্তব্য দিতে থাকেন। যারা খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের টাকা ফেরতের মিথ্যা আশ্বাস হিসেবে চেক দেওয়া হয় এসপিসির পক্ষ থেকে। কিন্তু অপর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকায় চেক ডিজঅনার হওয়ায় গ্রাহকদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায় তারা।
Advertisement
এএএম/এআরএ/জিকেএস