উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে চার কৃষক ‘হত্যার’ প্রতিবাদে যাওয়ার পথে আটক হয়েছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তাকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, রোববার (৩ অক্টোবর) রাতে উত্তর প্রদেশের তিকোনিয়ার উদ্দেশে রওয়ান দেন প্রিয়াঙ্কাসহ কংগ্রেসের নেতারা। তবে পথে দফায় দফায় পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। লখিমপুর খেরির জেলা সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরবর্তী জায়গাটিতে সম্প্রতি চার কৃষকসহ আটজন নিহত হন। সেই ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করতেই তিকোনিয়া যাচ্ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কিন্তু পুলিশ তার গাড়ি আটকে দেয়। এরপর পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে রওনা হন এ কংগ্রেস নেতা। তবে তাতেও বাধা দেওয়া হয় তাকে। শেষশেষ সোমবার (৪ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে প্রিয়াঙ্কাকে আটক করে পুলিশ।
কংগ্রেসের দাবি, প্রিয়াঙ্কাকে হরগাঁও থেকে আটক করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, লখনউ থেকে আটক হয়েছেন তিনি। এরপর প্রিয়াঙ্কাকে সীতাপুর জেলার একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউপি কংগ্রেস টুইটারে এ ঘটনার কথা জানিয়েছে।
Advertisement
লখিমপুর খিরি যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী গত রোববারের ঘটনার কথা বর্ণনা করে বলেন, এই দেশে কৃষকদের যেভাবে পদদলিত করা হচ্ছে, তাতে আমার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। কয়েক মাস ধরে কৃষকরা আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছে, কিন্তু সরকার শুনছে না। সেদিনের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে যে, এই সরকার কৃষকদের পিষে ফেলার রাজনীতি করছে। তবে এই দেশ কৃষকদের দেশ।
পথে বাধা পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনো অপরাধ করিনি। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এবং তাদের দুঃখ ভাগ করতে চাই। আমি কি ভুল করছি? যদি ভুল করে থাকি, তাহলে আপনাদের (ইউপি পুলিশ) কাছে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা উচিত। পুলিশ আমাকে আটকে দিয়েছে, কিন্তু কেন?
কী হয়েছিল লখিমপুর খেরিতে?রোববার বিকেলের দিকে লখিমপুর খেরিতে কৃষকরা বিক্ষোভ করার সময় একটি গাড়ি তাদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে দুই কৃষক প্রাণ হারান। অভিযোগ, সেই গাড়িতে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অজয় মিশ্রর ছেলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই সংঘর্ষ বেঁধে যায় পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। এতে চার কৃষকসহ আটজনের মৃত্যু হয়।
এরপর অজর মিশ্র ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন শুনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। কারণ, কেন্দ্রীয় এ মন্ত্রী দাবি করেছেন, সেই গাড়িতে তার ছেলে ছিলেন না। থাকলে কৃষকরা নাকি তাকে পিটিয়েই মেরে ফেলতো।
Advertisement
তিকোনিয়া নামে যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে আরও সহিংসতার আশঙ্কায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে তিন কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী। জেলায় আংশিকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, জি নিউজ
কেএএ/জিকেএস