রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থেকে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
Advertisement
শনিবার (২ অক্টোবর) রাতে নিখোঁজ শিক্ষার্থী দিলখুশ জান্নাত নিশার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মো. তরিকুল্লাহ (১৯), মো. রকিবুল্লাহ (২০), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন (১৮)।
রাতে মামলার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম।
Advertisement
ওসি বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিখোঁজ দিলখুশ জান্নাত নিশার বড় বোন কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় শুক্রবার এজাহারভুক্ত আসামি তরিকুল্লাহ, রকিবুল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। মামলা দায়েরের পর তাদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ কাজী দিলখুশ জান্নাত নিশা (১৬) পল্লবী থানাধীন সেকশন-১১, ব্লক-সি, ১৮ নম্বর রোডের মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। সে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লেখাপড়ার সুবাদে এক নম্বর আসামি তরিকুল্লাহ, রাকিকুল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ ও শরিফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নসহ দিলখুশের বান্ধবী লেহা আক্তার (১৭) ও কানিজ ফাতেমার (১৮) সঙ্গে পরিচয় হয়।
এতে বলা হয়, তিন নম্বর আসামি জিনিয়া প্রায় সময় দিলখুশের বাসায় আসা-যাওয়া করতো এবং প্রায় সময় তরিকুল্লাহ ও জিনিয়া বাসায় এসে নিশাকে ঘোরাফেরার জন্য বাইরে নিয়ে যেতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালের দিকে দিলখুশ বাসা থেকে বের হয়।
Advertisement
এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের পর তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করে দেখতে পান, আলমারির ভেতরে রাখা নগদ ছয় লাখ টাকা, স্বর্ণের গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নেই। তার বান্ধবী নেহা আক্তারের বাবা জানায়, বাসা থেকে তার মেয়ে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে। এছাড়াও কানিজ ফাতেমার বাবা জানায়, বাসা থেকেও তার মেয়ে আড়াই ভরি স্বর্ণের গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে দিলখুশ জান্নাত নিশা, কানিজ ফাতেমা ও নেহা আক্তার বাসা থেকে বের হয়। তারা কলেজ ড্রেস পরে এবং ব্যাগ নিয়ে বেরিয়েছিল। কিন্তু তারা আর বাসায় ফেরেনি। পরে নিখোঁজদের পরিবার জানায়, ওই ছাত্রীরা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় নগদ টাকা, স্বর্ণের গহনা, নিজেদের সার্টিফিকেট নিয়ে গেছেন। এখনো তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি।
পরিবারের দাবি, তাদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের জন্য বাসা থেকে টাকা ও গহনা নিয়ে বের হতে বলেছে একটি চক্র। ফলে তিন ছাত্রীকে পাচারের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।
টিটি/এএএইচ