জাতীয়

টাকা-গহনা-সার্টিফিকেট নিয়ে বেরিয়ে ফেরেনি তিন কলেজছাত্রী

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে কলেজে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি।

Advertisement

নিখোঁজরা হলো- কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসা, কানিজ ফাতেমা ও স্নেহা আক্তার। তারা সবাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

তাদের পরিবারের দাবি, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণের গহনা, সার্টিফিকেট ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে এক ছাত্রী ছয় লাখ টাকা, আরেকজন আড়াই ভরি স্বর্ণ নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়েছেন। অপরজন নগদ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে।

এছাড়া তারা নিজেদের এসএসসির সনদপত্রও নিয়ে গেছেন। তাদের প্রত্যেকের কাছে দামি মোবাইল ফোনও রয়েছে।

Advertisement

এদিকে, এ ঘটনায় পল্লবী থানা পুলিশ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। তারা হলেন, তরিকুল ও তনয়।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের দাবি, বিদেশে পাঠানোর প্রলোভোন দেখিয়ে ওই তিন ছাত্রীকে প্রলোভিত করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। এজন্য তারা বাসা থেকে নগদ টাকা মূল্যবান জিনিস চুরি করে পালিয়েছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১ অক্টোবর) নিখোঁজ কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসার মা মাহমুদা আক্তার পল্লবী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়। তারা হলেন- তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়া। এরমধ্যে জিনিয়া টিকটকে পরিচিত মুখ। আর তরিকুল ও রকিবুল সহোদর।

Advertisement

অভিযোগে মাহমুদা আক্তার জানান, দিলখুশ জান্নাত নিসা ও তার দুই বান্ধবী কানিজ ফাতেমা এবং স্নেহাকে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরছাড়া করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। পরিবারের কাউকে কিছু না বলে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সবাই নিজ নিজ বাসা থেকে একসঙ্গে বের হয়। বের হওয়ার সময় প্রত্যেকে বাসা থেকে কয়েক নগদ টাকা, গহনা, সার্টিফিকেট ও মোবাইল নিয়ে গেছে।

দিলখুশ জান্নাত নিসার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছোট বোন ও তার বান্ধবীদের বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এ জন্য তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে সবাই কলেজ ড্রেস পরে ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বের হয়। আমাদের মহল্লার প্রতিবেশী তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে তরিকুল আমার বোনের সঙ্গে প্রায়ই কথা বলতেন। তরিকুল তাকে (নিসা) বলতেন, সে অনেক বড় হ্যাকার ও বড় কোম্পানির মালিক। হরহামেশা আমেরিকায় লোকজনকে পাঠান। আমার বোন নিসা বাসায় এসে আমাকে বলেছিল, আপু তরিকুল তোমাকে তার কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার পদে চাকরি দিতে পারবে।’

কাজী রওশন দিল আফরোজ আরও বলেন, চক্রের সদস্য জিনিয়া নামের একজন তরিকুলের বান্ধবী। জিনিয়া আমার ছোট বোন ও তার বান্ধবীদেরও পরিচিত। জিনিয়ার বাসায়ও গিয়েছিলাম ওদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে। কিন্তু জিনিয়া দেখা করেনি। তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা মনে করছি, তরিকুল ও জিনিয়ার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জানেন, আমার বোন ও তার বান্ধবীরা কোথায় আছে।

জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার থানার অভিযোগ করেছেন। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

টিটি/এএএইচ/এএসএম