ভ্রমণ

তিতাস পাড়ের রহস্যময় জমিদার বাড়ি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে হরিপুর গ্রামে ১৮ শতাব্দীতে গড়ে ওঠে এই প্রাসাদটি। অনেকে রাজবাড়ি আবার বড়বাড়ি বলেও চেনেন। এই বিশাল প্রাসাদটি জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরির ১৮৭০-১৯৩৬ সালে নির্মাণ করেন।

Advertisement

নাসিরনগর সদর হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণপূর্বে ও হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার সংযোগপথে তিতাস নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত এই প্রাসাদটি।

একদিন আমি মহসিন ভাইকে নিয়ে বের হলাম। উদ্দেশ্য হরিপুর রাজবাড়ি। নাসিরনগর সদর হতে সিএনজি যোগে প্রায় ২০-২৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম আমরা।

আমরা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। বিশাল জায়গা নিয়ে নির্মিত এই প্রাসাদ। যেন প্রতিটা ইটে লুকিয়ে আছে ইতিহাস। আমরা লোকমুখে কিছু ইতিহাস জানলাম।

Advertisement

এই বাড়ির জমিদারগণ ত্রিপুরার প্রভাবশালী জমিদারদের উত্তরসূরি ছিলেন। জানা যায়, সুনামগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও হবিগঞ্জের আজমেরীগঞ্জের জনপদ কর প্রদান করত। দেশ বিভক্ত হওয়ার পর কলকাতায় চলে যায় এ প্রাসাদের সবাই।

কথিত আছে, এ ভবনে অনেক কিছুরই ব্যবস্থা ছিল। যা প্রাসাদের প্রতিটি ঘরই বলে দেয়। প্রাসাদের দ্বিতল কক্ষে ছিল পাশা খেলার ঘর। জমিদাররা সখ্যগণের সঙ্গে পাশা খেলতেন। এমনকি এই প্রাসাদে ছিল জলসাঘরও। প্রতিরাতে জমিদাররা বাইজিদের নিয়ে আমোদ প্রমোদ করতেন।

তবে প্রাসাদটির অবস্থান ও আশপাশ সব মিলিয়ে প্রেমে পড়ার মতো। বাড়ির ঠিক সামনে শান বাঁধানো ঘাট। এই ঘাটে আচঁড়ে পড়ে তিতাসের ছোট ছোট ঢেউগুলো। ভরা জোৎস্নায় হয়তো জমিদাররা এ ঘাটে বসে পূর্ণিমাস্নান করতেন।

আজ এ বিশাল প্রাসাদটি সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সঠিক সংস্কার করলে বহু বছর ঠিকে থাকবে প্রাসাদটি। যদিও এর দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।

Advertisement

জেএমএস/এএসএম