করোনা পরীক্ষার কিট ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠনের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একই সঙ্গে কিট ক্রয়ের দরপত্র বাতিল করে নতুন করে আবার কেন তা আহ্বান করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), আইইডিসিআরের পরিচালক, কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের পরিচালক, চীনের সানসিউর বায়োটেক কোম্পানির বাংলাদেশি এজেন্ট ওভারসিজ মার্কেটিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. (এসকে) মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
এর আগে ৩১ আগস্ট জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন।
Advertisement
রিটে বলা হয়, করোনাকালে বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শতশত কোটি টাকা লুটপাট ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। করোনা মোকাবিলায় একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী হলো করোনা শনাক্তকরণের মানসম্পন্ন কিটের ব্যবহার।
এসব কিট ক্রয় করার জন্য কেন্দ্রীয় ওষুধাগার কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ক্রয় করত। কিন্তু ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের পর করোনা শনাক্তকরণের আরটি-পিসিআর কিট উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় ক্রয়ের উদ্যোগ নেয় ওষুধাগার কর্তৃপক্ষ।
রিটে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে চলতি বছরের ২২ আগস্ট তিনটি লটে ১৮০ কোটি টাকার ২০ লাখ কিট কেনার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। ধারণা করা হয়েছিল করোনা প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় সরকার গৃহীত জনকল্যাণমূলক প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের পরিবর্তে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সঠিক মানসম্পন্ন কিট ক্রয় করা হবে। কিন্তু দরপত্রের শর্তের বেড়াজালে আটকে দেওয়া হয়েছে সুলভ মূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন কিট ক্রয়ের সম্ভাবনা।
রিট আবেদনে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় একটি নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটকে বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠেছে। বিষয়টি আমলে নেয় ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক গবেষণায় মানসম্মত কিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের চিত্রটি প্রতীয়মান হয়।
রিটে উল্লেখ করা হয়, প্রত্যেকটি কিটের বাজারমূল্য মাত্র ৫০০-৬০০ টাকা হলেও শুরুতে প্রতিটি কিট ক্রয় করা হয়েছে তিন হাজার টাকার ওপরে। এভাবে স্বাস্থ্যখাতের একটি সিন্ডিকেট এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে লুটপাট করেছে।
এছাড়া আরও অনিয়ম তুলে ধরে দরপত্র বাতিল ও এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।
এফএইচ/জেডএইচ/এমএস