ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের বৃহত্তম অংশীদার চীন। তাদের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি প্রয়োজন। তাহলে এলডিসি পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। চীনের সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাও সহজ হবে।’
Advertisement
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘চায়না-বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড কো-অপারেশন ফোরাম-২০২১’ এবং ‘চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি)’ সপ্তম কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জসিম উদ্দিন ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
তিনি বলেন, ‘২০১৯-২০ অর্থবছর চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ছিল ১১ দশমকি ৪৯ বিলিয়ন ডলার, বিপরীতে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ঢাকা-বেইজিং মুক্তবাণিজ্য চুক্তি প্রয়োজন।’
২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ১ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলারের চীনা বিনিয়োগের তথ্য জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এফটিএ হলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনা উদ্যোক্তাদের আস্থা আরও বাড়বে। ১০০টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান। এ অঞ্চলে বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।’
Advertisement
এসময় তিনি বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে সরকারের দেওয়া কর অবকাশ সুবিধা, ৫-১০ বছর পর্যন্ত হ্রাসকৃত হারে আয়কর, করমুক্ত রপ্তানি আয়, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও কাঁচামাল আমদানিতে হ্রাসকৃত আমদানি শুল্কের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ খুঁজে বের করতে গবেষণা প্রকল্প হাতে নেওয়ার আহ্বান জানান।
ব্যবসায়ী নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শিল্পক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি আদান-প্রদান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন, চামড়া, প্লাস্টিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কৃষি এবং বায়ো-টেকনোলজি খাতে চীনা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।’
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এ উদ্যোগ ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্র হতে বাংলাদেশের সামনে অবারিত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
Advertisement
এছাড়া বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. শেখ ইউসুফ হারুন।
অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা, সিইএবির সভাপতি কে চ্যাংলিয়াং, সংগঠনটির অনারারি লাইফ প্রেসিডেন্ট লিন ওয়েইকিয়াংসহ প্রতিনিধিরা।
ইএআর/এএএইচ/এমএস