অসত্য দিয়ে বেশিদিন টেকা যায় না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এখন শেখ হাসিনাকে ফেয়ারওয়েল দেওয়ার সময় এসে গেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এই আওয়ামী লীগ সরকারের ফেয়ারওয়েল হয়ে যাবে জনগণের কাছ থেকে। চিরন্তন ফেয়ারওয়েল হয়ে যাবে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানবসেবা সংঘের উদ্যোগে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও বহুদলীয় গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছে তারা এক দানবীয় পন্থায় ক্ষমতায় রয়েছে। নানা হুমকি দিয়ে, নানা কালাকানুন তৈরি করে, মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে তাদের নিজেদের কিছু মিডিয়া দিয়ে অনর্গল মিথ্যা বলিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখতে আপনি প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে ফেলেছেন। বিদেশি একজন মানুষ সিলেটে অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন। তিনি কি দেশের নাগরিক? অথচ একটি উচ্চপদে তিনি চাকরি করে যাচ্ছেন। তাহলে এ দেশের সার্বভৌমত্ব কোথায়? দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে গেছে। আজ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই আমার দেশের মাটি, দেশের সার্বভৌমত্ব বিপদের মুখে।
Advertisement
রিজভী বলেন, হিটলার, মুসোলিনিরা ফ্যাসিস্ট হলেও তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ছিল। তারা তাদের দেশকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছেন। তারা তাদের নিজের দেশকে ছোট করতে দেননি। তারা চেয়েছেন পৃথিবীর অন্য দেশের চেয়ে তাদের দেশ শক্তিশালী থাকুক। আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিটলারের, মুসোলিনির অপশিক্ষাগুলো নিয়ে কীভাবে বিরোধীদের দমন করা যায় তাই করছেন। দেশকে শক্তিশালী করার কোনো কিছু তিনি করেননি। বরং নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অন্য দেশকে যা কিছু দেওয়া যায় তিনি তাই দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই প্রধানমন্ত্রীর দেশের জনগণের প্রতি কোনো দয়া-মায়া আছে? কোনো কমিনমেন্ট আছে? কোনো কিছুই নেই। বাংলাদেশ থেকে তার লোকজন টাকা-পয়সা নিয়ে যাবে, এতে তার কিছু যায় আসে না। মালয়েশিয়ার অর্ধেক কিনে নেবে, কানাডায় বেগমপাড়া বানাবে। এতে তার কিছু যায় আসে না। কারণ তার লোকই তো ভালো থাকবে। হঠাৎ যত পারো বাংলাদেশ থেকে লুট করে নাও। এই লুট করতে যা করা লাগে তাই করো। যদি বিএনপি কিছু বলে তাহলে তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো আছে।
রিজভী বলেন, এখন একটাই মাত্র পথ, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন শেখ হাসিনার বিকল্প কী, শেখ হাসিনার বিকল্প হচ্ছে তার মতোই ফ্যাসিস্ট। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান তো গণতন্ত্রের প্রতীক। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ করেনি। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন জিয়াউর রহমান। সুতরাং শেখ হাসিনার সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার পার্থক্য তো থাকবেই। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির পার্থক্য তো থাকবেই।
Advertisement
বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন সাহস থাকলে তারেক রহমান দেশে আসুক না। তাদের বলি, সাহস থাকলে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন না। আপনাদের সাহস থাকলে একটা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দেন দেখি। সেই সাহস আপনাদের নেই। নিজেরা পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। দেখি সাহস আছে কিনা। কাদের সাহেব, সেই সাহস আপনাদের নেই। জনগণের অধিকার জনগণ আদায় করে নেবে।
সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপির পল্লী উন্নায়ন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম (শ্রাবণ) প্রমুখ।
কেএইচ/ইএ/এএসএম