করোনার কারণে দেড় বছরের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রায় চারশ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় উপজেলায় বেড়েছে বাল্যবিয়ের প্রবণতা।
Advertisement
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, মোট ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৮৯ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। উপজেলার প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটলেও রূপাপাত বামন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭২, পৌর সদরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪ এবং গোহাইলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বাল্যবিয়ের নিবন্ধন কোনো নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) করতে পারেন না। তাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রাররা নকল নিবন্ধন ফরমে সই নিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। পরে মেয়ের বয়স ১৮ পূর্ণ হলে রেজিস্ট্রেশন করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ওইসব ছাত্রীদের বিয়ের খবর শুনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিভাবকেরা জানান, ভালো ছেলে পাওয়ায় বিয়ে দিয়েছি।
Advertisement
উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের বনমালীপুর গ্রামের এক অভিভাবক বলেন, যুগ জামানা ভালো না। কখন কি হয়ে যায়। স্কুলও বন্ধ। তাই ভালো ছেলে পাওয়ায় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। সমস্যা নেই জামাই বলেছেন বিয়ের পরও পড়া লেখা করাবেন।
রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা বলেন, এলাকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী কৃষি ও শ্রমজীবি পরিবারের। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেড়েছে। উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে গড়ে ২৫-৩০ ভাগ শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ে ও বিবিধ কারনে ঝরে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, বাল্যবিয়ের বিষয়ে কেউ অভিযোগ এবং কিছু জানায়নি। এছাড়া কতজন ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়েছে সে সংখ্যাও জানা নেই।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/এএইচ/জিকেএস