রাজধানীর বাড্ডায় ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন রাইড শেয়ারিং প্লাটফর্ম ‘পাঠাও’র এক চালক। মামলার জেরে ক্ষোভ থেকে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন শওকত আলী নামে ওই চালক। গত সপ্তাহে ট্রাফিক পুলিশ একটি মামলা দেওয়ার পর আজ আবারও মামলা দিতে চাইলে ক্ষোভ থেকে এ কাজ করেছেন বলে জানান।
Advertisement
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় জনতা ইন্স্যুরেন্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল ও শওকত আলীকে বাড্ডা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শওকত আলী বলেন, ‘আমার নিজের ইচ্ছায়ই গাড়ি (মোটরসাইকেল) জ্বালাইছি। এতে তো আমারই ক্ষতি হলো। রাগ করতে গিয়ে নিজের গাড়িই জ্বালিয়ে দিলাম। পুলিশের কোনো দোষ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি কেরানীগঞ্জে ব্যবসা করতাম। দেড় মাস ধরে পাঠাও চালাই। গত সপ্তাহেও আমাকে একটা মামলা দেওয়া হয়েছিল। আজ ট্রাফিক পুলিশ আবারও মামলা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।’
Advertisement
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছি তা জানতে চেয়েছে। এখন আমি এলাকায় চলে যাচ্ছি। আমি এ ঘটনায় অনুতপ্ত।’
এ বিষয়ে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সকালে বাড্ডা এলাকায় একটি ঘটনা ঘটে। আমরা তার পোড়ানো গাড়ি ও তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসি।’
তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশের কোনো ভুল ছিল কি না, কী ঘটেছিল এসব বিষয় জনার জন্য ওনাকে এখানে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’
বাড্ডা থানার সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) সুবীন রঞ্জন দাস বলেন, লোকটি খুবই হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হলো। তার এলাকায় ব্যবসা ছিল। করোনায় লোকসান করে এখন বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এসব কারণে হতাশা থেকে হয়তো এ কাজ করেছেন।
Advertisement
ঘটনার আগে রাইড শেয়ারিংয়ের জন্য ওই এলাকায় অনেকে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কর্তব্যরত ট্রাফিক সদস্যরা সেখানে গেলে অনেকে সেখান থেকে সরে যান। তবে শওকত আলী সেখানে থেকে যান। এসময় কাগজপত্র চেক করতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
স্থানীয় দোকানদার জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলা দেওয়ার জন্য পুলিশ কাগজপত্র নিয়ে গেলে ওই লোক নিজের গাড়িতে (মোটরসাইকেল) হঠাৎ করে আগুন ধরিয়ে দেন। লোকটি পুলিশের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই আগুন ধরিয়ে দেন। এভাবে আগুন দেওয়ায় আমাদের দোকানপাটেও আগুন লেগে যেতে পারতো। আগুন নেভাতে গেলে আমাকেও গালিগালাজ করেন তিনি। এখানকার সাইনবোর্ডগুলোও আগুনের ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে।
দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামলা কিন্তু ওই লোককে দেওয়া হয়নি। পাশের একজনকে মামলা দেওয়ার সময় তিনি এ কাজ করেছেন। তিনি হঠাৎ করেই নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছেন।
এএএম/ইএ/এমএম