দেশজুড়ে

বিনোদনকেন্দ্রে ফিরছেন ভ্রমণপিপাসুরা

বৈশ্বিক মহামারি করোনা দেশের অন্যান্য খাতের মতো পর্যটন খাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। দীর্ঘ সময় পর্যটন বা বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় বিরত ছিলেন ভ্রমণপিপাসুরা। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি যতটা স্বাভাবিক হচ্ছে, ততই বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পদচারণা বাড়ছে ভ্রমণপিপাসুদের।

Advertisement

উত্তরাঞ্চলে যে কয়টি বিনোদনকেন্দ্র রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার ‘শখের পল্লী’। করোনার কারণে গত বছর প্রথমবারের ‘লকডাউনেই’ (মাত্র ৩ মাসে) প্রতিষ্ঠানটিকে ভর্তুকি গুণতে হয়েছে। এর পর কয়েক দফায় ‘লকডাউনে’ বন্ধ থাকার পরও অস্তিত্ব টেকাতে আর্থিক ক্ষতির মুখেও পার্কটি চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলে ব্যক্তিগতভাবে গড়ে ওঠা উল্লেখযোগ্য বিনোদনকেন্দ্রগুলো হল- দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী, রংপুরের ভিন্নজগৎ, জয়পুরহাটের প্রিন্সের শিশু উদ্যান, নওগাঁর ডানাপার্ক, নাটোরের গ্রীনভ্যালি, বগুড়ার সান্তাহারের ফারিস্তা ও শখের পল্লী অন্যতম। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে এসব বিনোদন কেন্দ্র।

এরমধ্যে ব্যক্তিগতভাবে নির্মিত বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে গড়ে ওঠা বিনোদন কেন্দ্র ‘শখের পল্লী’র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মেনে গত বছরের ১৮মার্চ প্রথমবারের মতো পার্কটি বন্ধ রাখার ঘোষণার পর আয় না থাকায় মাত্র ৩ মাসে সাড়ে ৭ লাখ টাকা ভর্তুকি গুণতে হয়েছে। পার্কটি টিকিয়ে রাখতে ও মানবিকতার স্বার্থে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কর্মহীন হয়ে পড়া ৩০জন কর্মচারীদের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হয়েছে। তাছাড়া পার্কের জীবজন্তু আর বিনোদনের নানা রাইডগুলো দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্মচারীদের দেওয়া হতো বেতন-ভাতা। তবে ভেতরের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও বন্ধ থাকায় প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে। কয়েক দফায় দেওয়া লকডাউনে বন্ধ রাখায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। বর্তমানে খুলে দেওয়ার পরও দর্শনার্থীদের পদচারণায় পার্কটি মুখরিত না হওয়ায় এখনও ক্ষতির মুখেও টিকে থাকায় লড়াই করে যাওয়া হচ্ছে। শুধু শখের পল্লীই নয়, সান্তাহারসহ আশপাশের প্রায় সব বিনোদনকেন্দ্রর অবস্থা প্রায় একই।

Advertisement

দর্শনার্থী আকরামুজ্জামান রনি জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে প্রায় দুই বছর ঘরবন্দি ছিলেন। বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার পর পরিবার-পরিজন নিয়ে পার্কে আসতে পেরে আনন্দিত। অনেকদিন পর বাচ্চারা বিভিন্ন রাইডসে উঠতে পেরে খুবই খুশি। দীর্ঘদিন পর তারা এখানে এসে আর বের হতেই চাচ্ছে না।

উপজেলার সান্তাহার শখের পল্লীর স্বত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম বলেন, শখের বসেই ‘শখের পল্লী’টি নির্মাণ করি। ২০১৬ সালে শুরুর দিকে প্রায় ৪৫ বিঘা জমির ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটি চালু করা হয়। এ পার্ক থেকে বাণিজ্যিকভাবে মুনাফা অর্জন করার চেয়ে এ এলাকার বেকারত্ব দূর করা আর বিনোদনপ্রেমিদের চাহিদা মেটানোয় আমার মূললক্ষ্য ছিল। করোনার কারণে কয়েক দফা বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। খুলে দেওয়ার পর বিনোদন কেন্দ্রে ফিরতে শুরু করেছেন দর্শনার্থীরা। আশা করা হচ্ছে, ‘করোনা পরিস্থিতি যত ভালো হবে, বিনোদনকেন্দ্রগুলোর আয়ও ততই বাড়বে।’

এমএএইচ/জেআইএম

Advertisement