১১ পেরিয়ে সবে ১২তে পা রাখল মো. সালমান হোসেন। এরই মধ্যে করোনায় মারা গেলেন তার বাবা মো. আলম হোসেন। সালমানের মা জামিলা উসমান (এ্যানি) ছেলেকে নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। দিকবিদিক ছুটছেন সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে।
Advertisement
জানা গেছে, মো. আলম হোসেনের (৪৩) করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর শাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মালয়েশিয়ার ক্লাং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ১১ সেপ্টেম্বর তাকে দাফন করা হয়।
আলম হোসেনের দাফন-কাফনে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন সালমানের স্কুল শিক্ষকরা। সালমানের বাবার মৃত্যুর পর স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছে। শুধু তাই নয়, বাসাভাড়া থেকে শুরু করে সবই করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লার দাউদকান্দির মারুকা গ্রামের মৃত মো. সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে আলম হোসেন ১৯৯৬ সালে মালয়েশিয়ায় আসেন। ২০০৫ সালে দেশে ছুটিতে গিয়ে কেরানীগঞ্জের ফয়েজ চৌধুরীর মেয়ে জামিলা উসমান এ্যানিকে বিয়ে করেন।
Advertisement
বিয়ের পর ২০০৮ সালের এপ্রিলে জামিলাকে নিয়ে আসেন মালয়েশিয়ায়। তখন থেকে ক্লাংয়ে একটি লটে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন আলম হোসেন। ভালোই চলছিল আলমের দিন। ২০১১ সালের ৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করে সালমান। ছেলে সালমানকে তিন বছর বয়সে প্রথমে একটি মক্তবে ভর্তি করেন। পরে ২০১৯ সালে স্থানীয় ইশাহাদাই এনজিওর স্কুলে ভর্তি করেন। যেখানে ১৯টি দেশের শরণার্থী শিশুরা লেখাপড়া করছে।
২৫ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সালমানের মা এ্যানির। এ সময় খবর পেয়ে ছুটে আসেন তার স্কুল শিক্ষকরা।
সালমানের শিক্ষকরা বলছেন, অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে তা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। বাবাহারা সালমানকে মানুষের মতো হতে হলে লেখাপড়া করতে হবে। অর্থের অভাবে কিছুতেই সালমানের জীবন ঝরে যেতে পারে না। তার লেখাপড়ার সব খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যেহেতু সালমান বাংলাদেশি নাগরিক, সেহেতু বাংলাদেশ হাইকমিশন ও মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আহ্বান জানিয়ে শিক্ষকরা বলছেন, অর্থের অভাবে সালমানের স্বপ্ন যেন ঝরে না যায় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা সবাই অসহায় সালমানের পাশে দাঁড়াই, তার দায়িত্ব নিই। এদিকে সালমানের মা এ্যানি (দুই মাসের প্রেগনেন্ট) ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সামর্থ্যবান প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
Advertisement
এমআরএম/জিকেএস