আর কয়েকদিন পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে পৌর নির্বাচন। প্রতীক বরাদ্দ হওয়ায় সরগরম হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনীর মুদ্রণপাড়া। দিনে-রাতে সমান তালে জেলার ছোট বড় মিলে ৪২টি ছাপাখানায় ব্যস্ত সময় পার করছে এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা। সরেজমিনে জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনীর ছাপাখানার গলিগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সবাই ব্যস্ত। কাজের চাপে শ্রমিকদের খাওয়া দাওয়ার সময় নেই। মুদ্রণ শিল্পে চৌমুহনীর সুনাম থাকা ও আধুনিকমানের মেশিন থাকায় নোয়াখালীসহ আশপাশ থেকে পৌর নির্বাচনে প্রার্থীরা পোস্টার, লিফলেট, ব্যানারসহ বিভিন্ন প্রচার সামগ্রী ছাপাতে ছুটে আসছেন এখানে। আর তাই এ শিল্পে নিয়োজিত ডিজাইনার থেকে শুরু করে কাগজ ব্যবসায়ীসহ সকলেই দিন-রাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন কাজের চাপ বেশি থাকায় বাড়তি কাজ ও বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ার আশায় শ্রমিকরা খুব খুশি।কথা হয় আনন্দ গ্রাফিকসের পরিচালক লিটনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকরা এসে ডিজাইন বলে দেয়ার পর আমার ডিজাইন করে দিই। এক এক প্রার্থীর এক এক রকম পছন্দ থাকায় ডিজাইন কয়েকবার করতে হয়। আগের চেয়ে বর্তমানে কাজের চাপ একটু বেশি। আর আয়ও বেশি। জননী অফসেট প্রেসের মেশিনম্যান আবুল কালাম বলেন, ভোট আসাতে তাদের কাজের চাপ বেশি। ওভারটাইম করতে হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। আর এ পরিশ্রমে আগের চেয়ে আয়ও বেশি হবে। তাই মনে আনন্দ আছে। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মালিক রফিকুল ইসলাম। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, সবাই অর্ডার দেয়ার পর পরই কাজের সাপ্লাই চেয়ে বসে। সবাইকে এক সঙ্গে তো সাপ্লাই দেয়া সম্ভব হয় না। তাই এখন বাড়তি কাজ করাতে হচ্ছে। দিনে রাতে সমানতালে ছাপার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এবার চৌমুহনীতে সবার চেয়ে বেশী নির্বাচনী অর্ডার পেয়েছেন লাকী অফসেট প্রেস। কথা হয় এ প্রেসের মালিক ফারুক হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, যে পরিমাণ কাজ পাওয়ার কথা সে পরিমাণ হয়নি। তার পেছনে কারণ হলো প্রার্থীর সংখ্যা কম। বিশেষ করে দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় মেয়র পদে দুই-তিন ছাড়া এবার কাউন্সিলের প্রার্থীরা সংখ্যা কম। তাছাড়া নোয়াখালীর চাটখিল ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকে নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় সে অর্ডারগুলো আর পাননি। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিধি নিষেধের কারণে অনেকে পোস্টার-লিফলেট কম ছাপিয়েছেন। সঙ্গে তো রয়েছে কাগজ-কালিসহ ছাপার দাম বৃদ্ধি। নোয়াখালী জেলা মুদ্রণ শিল্প সমতির সাধারণ সম্পাদক ও গনি আর্ট প্রেসের সত্ত্বাধিকারী আশরাফ ছিদ্দিকী বাবু জাগো নিউজকে বলেন, ভোট ছাড়াও এমনিতে এখন কাজের মৌসুম। তবে গত তিন বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কাজের চাপ তুলনামূলক এখনকার চেয়ে কম ছিল। তবে আশা ছিল পৌর নির্বাচন উপলক্ষে কাজের চাপ আরও বেশি থাকবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কাজের চাপ কম। তারপরও আমরা খুশি। তবে এখন অর্ডার কম হলেও সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। তখন তা পুষিয়ে নেয়া যাবে। এসএস/এমএস
Advertisement