হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগে করোনার নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) গেছেন ৪৬ জন প্রবাসী কর্মী। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে-৫৮৭) ফ্লাইটযোগে তারা আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেন।
Advertisement
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে ৪৬ জন যাত্রী আমিরাতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। যদিও ৫০ জন যাত্রীর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমিরাত ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষার সময় বেধে দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৪৬ জন যাত্রী উপস্থিত থাকায় তাদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় সকল যাত্রীর করোনা নেগেটিভ এসেছে। ইউএইতে পৌঁছানোর আবারও তাদের করোনা পরীক্ষা করা হবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিমানবন্দরের ভেতরে ইউএই’র ৪৬ যাত্রীকে পৃথকভাবে বসিয়ে সতর্কতার সঙ্গে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীকালে বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য নির্বাচিত সাতটি প্রতিষ্ঠানের একটি (ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক) প্রতিষ্ঠানের মোবাইল আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে ৪৬ যাত্রীর সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা ও রিপোর্ট প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, ইউএই সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে যারা তাদের দেশে যাবেন সেসব দেশের বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করার ছয় ঘণ্টা আগে আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ সনদ নিয়ে যেতে হবে। শুধু তাই নয় সে দেশের বিমানবন্দরে নামার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হবে। সেই পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে কেবল তখনই তাদের বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেওয়া হবে।
Advertisement
ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এমন শর্তে অসংখ্য প্রবাসী কর্মী যাদের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে তারা বিপাকে পড়ে যান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুত নমুনা পরীক্ষার জন্য তারা দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র আহ্বানের সাড়া দিয়ে দুই ডজন প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটির কাছে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সভায় যাচাই-বাছাই শেষে মোট সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।
এদিকে, মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। সেখানে আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি বিমানবন্দরের কার পার্কিং এলাকার বদলে ভেতরে স্থাপনের নির্দেশনা দেন তিনি।
এমইউ/ইএ/জিকেএস
Advertisement