২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বরে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ‘দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের নিকটে গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের’ অগ্রগতি পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
Advertisement
কক্সবাজার শহরের কাছে আইকনিক স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ স্থানে রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কক্সবাজারে ট্রেন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এটির নির্ধারিত মেয়াদ ধরা আছে। করোনাকালীন কাজ করতে সমস্যা এবং নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি কিছু স্থাপনার জমি পেতে সমস্যার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়। কাজেই ছয় মাস পিছিয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বরে এটি উদ্বোধনের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে ট্রেন চালু হলে পর্যটকদের ব্যাপকহারে আগমন ঘটবে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। আইকনিক স্টেশনের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এখানে যাত্রীরা এসে থাকতে পারবে, এমনকি তাদের মালামাল রাখার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এই প্রকল্পে এখনো কিছু মামলা আছে, সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাগুলো পরিবারকেন্দ্রিক, তবে প্রকল্পের স্বার্থে স্থানীয়রা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জমি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সবকিছু এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে। এটি ট্রান্স এশিয়ান রেললাইনের একটি অংশ। ভবিষ্যতে মিয়ানমার তাদের অংশ করলে গুনদুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হবে। চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত নতুন ১৮ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হবে। কক্সবাজারে বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে এবং এখানকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।
Advertisement
রেলমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। সকল সেক্টরে উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সারাদেশে অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ ১০টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে একটি।
রেলমন্ত্রী পরে নির্মাণাধীন রেললাইন হেঁটে পরিদর্শন করেন। ইতোমধ্যে প্রায় ছয় কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়েছে। মন্ত্রী সেটিও ঘুরে দেখেন।
রেল বিভাগ জানিয়েছে, এডিবির অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নতুন সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মিত হচ্ছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনাসহ পর্যটকরা সাশ্রয়ী আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এছাড়া সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা সম্ভব হবে।
রেলমন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
এমএমএ/ইএ/এএসএম