আইন-আদালত

সেই ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ

ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার মামলায় আট বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন শুনানি কার্যতালিকা (কজলিস্ট) থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।

Advertisement

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আজ আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মুরাদ রেজা ও রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম।

এর আগে নুসরাতের আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার মামলায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ রায় দেন।

Advertisement

রায়ে আদালত বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে এই টাকা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দিতে হবে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ওই দিন মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইদুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তবে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল নুসরাতের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পিবিআই গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেন। এর ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেমকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে কারাগারে আছেন তিনি।

Advertisement

নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তার মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ এপ্রিল সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এর ১০ দিন আগে নুসরাত মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন ও তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ আনা হয় মামলায়।

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই রায় ডেথ রেফারেন্স হিসেবে শুনানির জন্য হাইকোর্টে রয়েছে।

এফএইচ/এআরএ/এমএস