শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু আর রাতে আতশবাজির মাধ্যমে শেষ হলো পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী নবকুমার ইনস্টিটিউশনের শতবর্ষ উদযাপন। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে ভিড় করেন শত শত সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। দিনভর তারা নানা উৎসবের মাধ্যমে পালন করেন প্রিয় প্রতিষ্ঠানের শতবার্ষিকী। সকালে ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভা যাত্রাকে নান্দনিক করে তোলে বিশাল বিশাল হাতি। এরপর পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও একশ’ সাদা পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র, শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রফেসর অ্যামেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র ব্যারিস্টার নজামুল হুদা, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্রী অধ্যাপক খালেদা একরাম, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র হাজী মো. সেলিম, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, নবকুমার ইনস্টিটিউশন ও ড. শহীদুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র অধ্যাপক আব্দুল হালিম প্রমুখ। দুুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই প্রচণ্ড শীতের মধ্যে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হারিয়ে যান অতীতে। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রত্যেকে। সন্ধ্যায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয় প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র। এর পরে প্রদর্শিত হয় নান্দনিক লেজার শো। পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সর্বশেষে কুয়াশাছন্ন আকাশকে রঙিন করে তোলা হয় আতশবাজির মাধ্যমে। আর এর মধ্য দিয়ে পর্দা নামে শতবর্ষ উদযাপনের।প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে ঢাকার অভিজাত অংশের (বর্তমান পুরান ঢাকা) অধিবাসীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে জমিদার ও শিক্ষানুরাগী নবকুমার ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন `নবকুমার ইনস্টিটিউশন`। ছয়তলা ভবনের নবকুমার ইনস্টিটিউশনটির সঙ্গে ১৯৭৩ সালে যুক্ত হয়েছে আরো একটি নাম `ড. শহীদুল্লাহ কলেজ`। অর্থাৎ গোটা প্রতিষ্ঠানের নাম হচ্ছে ‘নবকুমার ইনস্টিটিউশন ও ড. শহীদুল্লাহ কলেজ’। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মতিউর রহমানসহ সমাজ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অসীন ব্যক্তিরা। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।এনএম/এসকেডি/আরআইপি
Advertisement