দেশজুড়ে

শ্রেণিকক্ষেই সপরিবারে বসবাস প্রধান শিক্ষকের

বরগুনার পাথরঘাটার জালিয়াঘাটা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তিনি সেখানে বসবাস করে আসছেন। এ বিষয়ে জানেন না বলে দাবি শিক্ষা কর্মকর্তার। খোঁজ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনের দোতলায় দুটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে প্রধান শিক্ষক তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকছেন। শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি বেঞ্চ ব্যবহার করে বানিয়েছেন খাট। ব্যানার দিয়ে ঘিরেছেন রান্নাঘর। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য শৌচাগারও ব্যবহার করছেন তারা।

এ নিয়ে কথা হয় প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এটা প্রধান শিক্ষকের স্পেশাল রুম। এটা তৈরিই করা হয়েছে শিক্ষকদের রান্না ও থাকার জন্য। এছাড়া বিদ্যালয়ে কাজ চলছে। নির্মাণ শ্রমিকদের খাওয়ানোর জন্যও রান্না করতে হয়। আমি বিদ্যালয়ের অব্যবহৃত কক্ষে বসবাস করছি। এটা সবাই জানে। আপনি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেন।

Advertisement

একপর্যায়ে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি এইহানে থাকি, আপনাদের সমস্যা কী, আপনারা যা পারেন করেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই তিনি কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয়ের কক্ষ দখল করে বসবাস করছেন। এ নিয়ে তাকে কেউ কিছু বলার সাহস পান না। কারণ, শিক্ষার্থীদের প্রধান শিক্ষক তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় কক্ষে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন। আসলে আলাদা করে তার জন্য বাসভবনের ব্যবস্থা নেই। তবে বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটিকে অবহিত করে অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমার জানামতে তিনি সেটি না করেই বিদ্যালয় ভবনের দুটি কক্ষ থাকার জন্য ব্যবহার করছেন।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি জালাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়টির বর্তমানে ব্যবস্থাপনা কমিটি নেই। অ্যাডহক কমিটি দিয়ে কার্যক্রম চলছে। প্রধান শিক্ষকের বসবাসের জন্য বিদ্যালয়ে কোনো কক্ষ বরাদ্দ নেই। ওই শিক্ষক অনেক আগে একবার বিদ্যালয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন। পরে আমরা তাকে নেমে যেতে বলার পর কক্ষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। আবারও তিনি উঠেছেন বলে শুনেছি।

Advertisement

পাথরঘাটা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ মুনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি তিনি পরিবার নিয়ে শ্রেণিকক্ষে বসবাস করেন তবে বিষয়টি আমরা দেখব।

জেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার জানামতে প্রধান শিক্ষক নিজস্ব বাসা নিয়ে থাকেন। শ্রেণিকক্ষ দখল করে থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে যথাযথ নেয়া হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলছি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

এসজে/এএসএম