স্বজনদের খোঁজ বা জিম্মাদার না পওয়ায় সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগারে দীর্ঘ তিন বছর ধরে আটক রয়েছেন ষাটোর্ধ্ব গিল্লি বেগম ওরফে ইঁদুর মা। জানা যায়, সিলেটের কানাইঘাট এলাকার লোকজন গিল্লি বেগমকে ‘পাগল’ বলেই ডাকতো। তিনি ঘুরে বেড়াতেন কানাইঘাটের বাজার, রাস্তাঘাটে, অলিগলিতে। কোনো কোনো সময় ‘পাগল’ বলে তার উপর ঢিল ছুঁড়ত বখাটেরা।২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভবঘুরে আইনে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় গিল্লি বেগম ওরফে ইদু’র মাকে আটক করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। স্বজনদের খোঁজ না মেলায় তাঁর ঠাই হয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেই থেকেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনি আটক আছেন। তিন বছর ধরে কাটছে তাঁর অনন্তহীন বন্দী জীবন। সিলেট কারা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মানসিক অসুস্থতা অনেকটা কাটিয়ে উঠলেও এখনো স্পষ্ট করে বলতে পারেন না স্বজনদের কথা। এমনকি খোঁজ মেলেনি তার কোনো জামিনদার কিংবা আত্মীয় স্বজনেরও। সে কারণে মুক্তি মিলছে না তাঁর। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে আধো আধো শব্দে অস্পষ্ট উচ্চারণ ষাটোর্ধ্ব গিল্লি বেগমের। বিস্মৃতি হয়ে গেছে স্বামী সন্তানের নাম ঠিকানা। কখনো আনমনেই বলে যান অতীতের টুকরো কষ্টের কথা। কিন্তু তাতে তাঁর পরিচয়ের ব্যাপারটি স্পষ্ট হয় না। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ অসুস্থ গিল্লি বেগমেকে ওসমানী হাসপাতাল ও পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন। এতে শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার।গিল্লি বেগমের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাসহ অনেকেই। অ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম বলেন, গিল্লি বেগমের মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধার কোনো জামিনদার কিংবা আত্মীয় স্বজন খুঁজে না পাওয়াতে কারা হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে তাকে। তবে স্বজন কিংবা উপযুক্ত জামিনদার পেলে তাকে আদালত মুক্তি দেবেন।ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর
Advertisement