দেশজুড়ে

‘১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব লেখক অধিকার দিবস’ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি

‘অক্ষরে অমরতা’ স্লোগানে পতাকাবাহী আন্তর্জাতিক সাহিত্য ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান ‘কলম একাডেমি লন্ডন’ এর উদ্যোগে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব লেখক অধিকার দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়েছে।

Advertisement

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস আর রহমান হলে কলমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী লন্ডন থেকে দাবিসমূহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাস্তবায়ন ও প্রতিষ্ঠার দাবিতে কলম একাডেমি লন্ডনের কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রাবন্ধিক ও গণমাধ্যমকর্মী মো. কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দশ্যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি করুণা আচার্য, কলম একাডেমি লন্ডন চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দিন ফারুক, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক জিতেন্দ্রলাল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি কুতুবউদ্দিন বখতেয়ার, মুক্তিযোদ্ধা শুক্কুর চৌধুরী, উপদেষ্টা ফজল কাদের, রোটারিয়ান দুর্জয় পাল ও জয়নাল ফয়েজি প্রমুখ।মো. কামরুল ইসলাম কলম একাডেমি লন্ডনের পক্ষে তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১০ বছর ধরে সাহিত্যের মাধ্যমে বিশ্বে অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্যসমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের দেশে দেশে এমনকি গ্রামপর্যায়েও কলমের সংগঠন আছে।

Advertisement

এই সংগঠন বিশ্বজুড়ে এক অনুপম ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করেছে। জাতি, ধর্ম, দর্শন, শ্রেণি ও বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে পৃথিবীতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ সংগঠন ব্রিটেন এবং বাংলাদেশ থেকে রেজিস্ট্রার্ড চ্যারিটিবল সংস্থা (দুই জাহানের সংগঠন) ‘সারাহ-হাবিব লন্ডন’ এর অন্বিত সংগঠন।

সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি, এই সংগঠন বিভিন্নভাবে সমাজের অসহায় দরিদ্র মানুষের সেবায় এগিয়ে আসে। এই সংগঠন বই-পুস্তক লিখে দেশে-বিদেশে বিনামূল্যে বিতরণ করে থাকে। শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, ভারত ও বাংলাদেশের লেখকের লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ করে বহির্বিশ্বে প্রচার প্রসারের ব্যবস্থাকরণ এবং বাংলা ভাষার উপর বহিঃবিশ্বে সভা-সেমিনার করাসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকে সংগঠনটি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এদেশে এনে এবং তিনি ইউনাইটেড নেশনে বাংলায় বক্তব্য রেখে আজ ইতিহাস হয়ে আছেন। অনুরূপভাবে আমরা বিশ্বাস করি প্রধান মন্ত্রী লক্ষ্য লক্ষ্য লেখকের মনের আবেদন ‘লেখক মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘কলম একাডেমি লন্ডন’ এর শাখা আছে। এই সংগঠনে ভিন্ন ভাষাভাষীর লেখকরাও আছেন। তারাও তাদের দেশে এই দাবির পক্ষে কাজ করছেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা একজন বাংলাদেশি তাই তিনি চান এই দাবির বাস্তবায়ন প্রথম বাংলাদেশ থেকে এবং চট্টগ্রাম থেকে শুরু হোক।

Advertisement

এতে বাংলাদেশের নাম ও সম্মান আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের ভিন্ন ভাষাভাষীরা বাংলাভাষার প্রতি আগ্রহী হবে। বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। বেশ কিছু কারণে লেখকদের পাশে আমরা প্রধানমন্ত্রীসহ আপনাদের পেতে চাই-আমরা বাঙালি। বাংলা ভাষাকে সবাই ভালোবাসেন। সাহিত্যকে ভালোবাসেন। আমি লক্ষ্য করেছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী গ্রামগঞ্জের সাহিত্য সম্পর্কেও খবরাখবর রাখেন, এবং অনেক সময় কবিতা বা গান শুনে আপ্লুত হয়ে পড়েন!

তাই কলম একাডেমি লন্ডন ও এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক নজরুল হাবিবী মনে করেন আমাদের এই নৈতিক এবং যৌক্তিক দাবি পূরণ করা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব, কারণ আমাদের কথাগুলি প্রধানমন্ত্রী ও আপনাদের মনের কথা।

তিনি বলেন, লেখকেরা যদি স্বাচ্ছন্দ্যে লিখতে পারেন তখন সাহিত্য সমৃদ্ধ হবে। লেখক সুখি হলে, অভাবে না থাকলে নির্দ্বিধায় নিশ্চিন্তে নানাবিধ কল্যাণকর সাহিত্য রচনা করতে পারবেন। এতে জাতি শিক্ষিত হবে। দেশ মর্যাদাশীল হবে। বিশ্বের ধনী এবং শিক্ষিত রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে।

বাংলাদেশ, বাংলাভাষা এবং বাংলাসাহিত্যের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বে বেড়ে যাবে। তাই কলম একাডেমি লন্ডনের দাবি বিশ্বের সব দেশে লেখক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, (যার সূচনা হবে বাংলাদেশ থেকে)। বিশ্ব লেখক অধিকার দিবস’ এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, লেখক পরিবারের জন্য সরকারি ভাতা, লেখক ও তার প্রজন্মের জন্য ফ্রি শিক্ষা/উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, লেখক ও তার পরিবারের জন্য ফ্রি চিকিৎসা, লেখক ও তার পরিবারের জন্য ফ্রি বাসস্থান, জাতীয় পর্যায়ে পল্লী লেখকদের স্বীকৃতি, সরকারি খরচে পল্লী লেখকদের সাহিত্যকর্মের প্রকাশ ও বিক্রির ব্যবস্থা, চাকরিতে লেখক কোটার ব্যবস্থা, লেখক ও তার পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লেখকের গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিকে বাস্তবে রূপ দিয়ে নতুন একটি ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের লক্ষ্য কোটি লেখকের কাছে তিনি হয়ে থাকবেন পরম সম্মানিত। লেখকেরা আজীবন তাকে নিয়ে লিখবেন। তারা আজীবন গাইবেন প্রধানমন্ত্রীর গুণগান। লেখকের কলমে আজকের প্রধানমন্ত্রী পাবেন ‘অক্ষরে অমরতা’। করোনা পরিস্থিতে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এমআরএম