দেশজুড়ে

এই দিনে মুক্ত হয় ঈশ্বরদী

আজ ১৯ ডিসেম্বর। ঈশ্বরদী হানাদার মুক্ত দিবস। ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের মাধ্যমে ৯ মাসের সশ্রস্ত্র যুদ্ধের পর আজকের এই দিনে ঈশ্বরদী হানাদার মুক্ত হয়। বেশ কয়েকজন পাকসেনা ও রাজাকার ঈশ্বরদী শহরের অবাঙালি অধ্যুষিত লোকোসেড এলাকায় আত্মগোপনে থাকায় ঈশ্বরদী মুক্ত হতে তিনদিন সময় বেশি লেগেছিল। লড়াইয়ের ৯ মাসে ঈশ্বরদীর জয়নগর, মাধপুর ও দাশুড়িয়ায় পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ ও বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এসব যুদ্ধে শহীদ হন ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ঈশ্বরদীতে ৬৮৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ভারতে ট্রেনিং নিয়ে লড়াই করেন। তারা বর্তমানে সবাই সরকারি ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এর বাইরে ৬৭ জনের কাগজপত্র ত্রুটিপূর্ণ থাকায় তাদের সুবিধা বঞ্চিত রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯ মাসে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকায় অবাঙালি, রাজাকার ও পাকসেনাদের হাতে অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এদের সেই সময় গণকবরে সমাপিত করা হয়। এ ধরনের গণকবর রয়েছে ১০টি। তবে এসব গণকবরের প্রায় সবগুলোই রয়েছে অরক্ষিত ও অবহেলিত। ১১ই এপ্রিল’৭১ পাকসেনারা ঈশ্বরদীতে প্রবেশ করলে অবাঙালিরা সক্রিয় হয়ে বাঙালি নিধন শুরু করে। এদের সহযোগিতায় পাকসেনারা ঈশ্বরদীর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আশ্রয় নেয়া ১১ জন নিরীহ বাঙালিকে ধরে এনে রেললাইনের পাশে কয়লা গুদামে হত্যা করে গণকবর দেয়। বর্তমান প্রেসক্লাবের পাশে এদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। ঈশ্বরদীতে অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য সরকার ৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকার একটি চেক পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর। তালিকা প্রণয়ন করে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করা হবে। তবে একজন মুক্তিযোদ্ধা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ পাবেন। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা তালিকা তৈরি করে সমাজসেবা অফিসকে সহযোগিতা করবো। অর্থের পরিমাণ হিসেবে সকলেই চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। এছাড়া সরকারি উদ্যোগে মাজদিয়া, বড়ইচারা, রূপপুর  ও লক্ষ্মীকুন্ডা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫টি নতুন বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। আলাউদ্দিন আহমেদ/এসএস/পিআর

Advertisement