অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেছেন তাদের আইনজীবী।
Advertisement
আজ শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তাদের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহিদুল ইসলাম। এ সময় তাদের আইনজীবী তাদের জামিন আবেদন করেন।
বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে তাদের রিমান্ড ও জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব।
Advertisement
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অভিযোগকারী আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করেন তারা। পণ্যগুলো সাত থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারির কথা ছিল। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী ও তার বন্ধুরা।
একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য সরবরাহ কিংবা টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডির অফিসে যান ভুক্তভোগীরা। এ সময় তারা ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সেখানে থাকা অফিসের কর্মীরা বাদী ও তার বন্ধুদের ওপর উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির সিইও রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে বাদীসহ অন্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
মামলার এজাহারে বাদী আরও বলেন, ইভ্যালির অফিসে তাকে ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকিসহ দুর্ব্যবহার করা হয়, ফলে তিনি চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিনযাপন করছেন। এছাড়া পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় তিনি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
Advertisement
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাব চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছিল।
তারও আগে বিএফআইইউ নাসরিন ও রাসেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয়।
জেএ/এনএইচ/এমএইচআর/জিকেএস